বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্তের হুমকি শেভরনের


প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ২৩ মে ২০১৭

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোম্পানি থেকে বরখাস্তের হুমকি দিয়েছে।

মার্কিন এই কোম্পানির মালিকানাধীন বাংলাদেশের তিনটি গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্র চীনা প্রতিষ্ঠান হিমালয় এনার্জির কাছে বিক্রির প্রতিবাদকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওই হুমকি দেয়া হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স শেভরনের একটি চিঠিতে এই তথ্য পেয়েছে।

চাকরিচ্যুতির এ হুমকির কারণে হিমালয় এনার্জির সঙ্গে শেভরনের প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি বিলম্ব হতে পারে।

গত এপ্রিলে বাংলাদেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্র হিমালয় এনার্জির কাছে বিক্রির ঘোষণা দেয় শেভরন। হিমালয় এনার্জি চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি চায়না ঝেংহুয়া অয়েল অ্যান্ড সিনিক কর্পোরেশন লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ঝেংহুয়া চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি এবং সিনিক ২০১২ সালে হংকংয়ে প্রতিষ্ঠিত চীনের একটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্র চুক্তির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি খাতে এই প্রথম বড় ধরনের বিনিয়োগ করে চীন। এ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য ভারত এবং জাপানের সঙ্গে বিনিয়োগ প্রতিযোগিতায় নেমে কয়েক হাজার বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করছে বেইজিং।

শেভরন বাংলাদেশের কর্মচারী ইউনিয়নের মহাসচিব শাহরিয়ার আবেদিন রয়টার্সকে বলেন, শেভরনের ছয়শ কর্মী মালিকানা পরিবর্তন সম্পর্কিত কাজ বন্ধ রেখেছে। কারণ সরকার ওই চুক্তির অনুমোদন দেয়নি। বাংলাদেশি এ কর্মকর্তা শেভরনের চুক্তি প্রক্রিয়াকে অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন।

মঙ্গলবার শেভরন ওই চিঠিতে বলেছে, নতুন মালিকানা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সাবলীল এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার জন্য সব কর্মচারীকে কাজ করার অনুরোধ মেনে চলতে হবে।

‘কোনো কর্মচারী তাদের সুপারভাইজারের এ ধরনের অনুরোধ মানতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতিসহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণে থাকা তিনটি তেল-গ্যাস ক্ষেত্র বিক্রির চুক্তির কথা গত মাসের শেষের দিকে জানায় শেভরন। ওই চুক্তির ফলে বিবিয়ানা, মৌলভীবাজার ও জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা হিমালয় এনার্জির হাতে যায়। এই তিন গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রত্যেক বছর অন্তত এক কোটি ৬০ লাখ টন গ্যাস উৎপাদন হয়, যা রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস কোম্পানি পেট্রোবাংলার উৎপাদিত দেশের মোট তেল ও গ্যাস উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি।

তবে দেশের ভেতরে শেভরনের মালিকানায় থাকা যেকোনো ধরনের সম্পত্তি বিক্রিতে বাধা দেয়ার অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের। পেট্রোবাংলার পরিচালক মাহবুব সরওয়ার বলেন, বিক্রি প্রক্রিয়ার জন্য পেট্রোবাংলার কাছে মার্কিন এই কোম্পানির অনুমোদন নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে জ্বালানি পরামর্শক ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেনজির প্রতিবেদনের ওপর সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশে শেভরনের সম্পত্তি মূল্যায়নের জন্য ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেনজির প্রতিবেদন নেয়া বাধ্যতামূলক।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।