ব্রিটেনে নির্বাচন আজ : আশাবাদী রুশনারা টিউলিপ রূপা


প্রকাশিত: ০২:৩৫ এএম, ০৭ মে ২০১৫

গণতন্ত্রের সূতিকাগার ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ রেহানার মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। টিউলিপ ছাড়াও এবারের নির্বাচনে আলোচনায় রয়েছেন প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী ও ড. রূপা হক। ব্রিটেনের প্রভাবশালী সব অনলাইন, প্রিন্ট আর ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ঘুরেফিরেই আসছে টিউলিপ সিদ্দিক ও ড. রূপা হককে নিয়ে নানা খবর। ব্রিটেনের নির্বাচনী ইতিহাসে কোনো অভিবাসী প্রার্থী নিয়ে এবারের মতো এত মাতামাতি আর হয়নি।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও তাদের জোট শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাট (লিব ডেম) এবং প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির হয়ে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ১২ প্রার্থী। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ৬ প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন লেবার পার্টি থেকে।

লেবার পার্টির এমপি রুশনারা আলী আগে থেকেই ব্রিটেনে সুপরিচিত। রুশনারা আলী (৪০) বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে এ আসনেই সাড়ে ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে প্রথম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মুসলিম এমপি হয়ে ইতিহাস গড়েন রুশনারা। এ আসনের ৮০ হাজার ভোটারের প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। রুশনারা দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির অন্যতম নীতিনির্ধারক। দলটির ছায়া মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রীও ছিলেন তিনি। রুশনারা আলী এবারও জয়ী হবেন বলে সবার আশা।

লেবার পার্টির হয়ে টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক (৩৩) লড়ছেন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে। ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে রয়েছেন টিউলিপ। ২৩ বছর ধরে লেবার পার্টির দখলে রয়েছে এ আসনটি। কিন্তু এবার জটিল এক সমীকরণে রয়েছে এ আসন। ২০১০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবারদলীয় প্রার্থী গ্গ্নেন্ডা জ্যাকসন অনেকটা হারতে হারতেই মাত্র ৪২ ভোটে জিতে যান এ আসনে। এ কারণেই ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এবার এ আসনটিকে `টার্গেট সিট` বানিয়েছে।

তবে আশার খবর হচ্ছে, সর্বশেষ প্রাক-নির্বাচনী জরিপে টিউলিপের পক্ষে ৪৮ শতাংশ ভোটার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। বিপরীতে তার প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী টোরি সায়মন মার্কাস ৩২ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। নিজের এলাকা ক্যামডেন বরো কাউন্সিলের কেবিনেট সদস্য হিসেবে স্থানীয় স্কুল ও হাসপাতাল রক্ষায় লড়াই করে দরিদ্রদের আস্থা পেয়েছেন টিউলিপ। কিশোর বয়স থেকেই টিউলিপ এ এলাকায় বড় হয়েছেন, স্কুলে পড়েছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টিতে। ২০১০ সালে টিউলিপ ক্যামডন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি হিসেবে প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। টিউলিপের এ আসনটি ব্রিটেনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাঙালি অধ্যুষিত।

রুশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিকের পর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি সবচেয়ে বেশি আশাবাদী ড. রূপা হককে (৪৩) নিয়েই। তার প্রতি ভোটারদের আস্থাই এমন আশাবাদ জাগিয়ে তুলেছে। ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটনে লেবার পার্টির প্রার্থী তিনি। লন্ডনের ইলিংবরার ডেপুটি মেয়র ছিলেন রূপা হক। রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন কিংসটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল।

এদিকে, প্রাকনির্বাচনী কিছু জনপ্রিয়তা-নিরূপক আয়োজনে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টিকে আর সমস্ত দল থেকে অনেকখানি এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাদের নিজেদের মধ্যে চলছে প্রচণ্ড লড়াই। মনে হতে পারে এই দুয়ের যে কোনো দলই জয়ী হয়ে যেতে পারে বৃহৎ কোনো নির্বাচনী ইস্যুবিহীন এ জাতীয় প্রতিনিধি-প্রতিযোগীতায়।

এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।