দেশীয় পণ্যে ঝুঁকছে উত্তর কোরিয়া
গাজর ফ্লেভারের টুথপেস্ট থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল, সোলার প্যানেলসহ নিজস্ব উৎপাদিত পণ্যের দিকে ঝুঁকছে উত্তর কোরিয়া। চীনা পণ্য আমদানির পরিবর্তে দোকান ও সুপারমার্কেটে স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্যের উপস্থিতি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দেখেছেন বলে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া ঘুরে আসা পর্যটকরা জানিয়েছেন।
ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানতে উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে সামরিক শক্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বৈত-কৌশল অবলম্বন করছে পিয়ংইয়ং।
উত্তর কোরিয়ার অধিকাংশ পণ্য এখনও চীন থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু দেশটির নেতা কিম জং উনের শাসনামলে দেশীয় পণ্য বিক্রির চেষ্টা দেখা যায়। মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকানো, জাতীয় মতাদর্শকে শক্তিশালী করতে এবং আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াতে দেশীয় পণ্যের উৎপাদনের ওপর জোর দেন কিম।
তবে উত্তর কোরিয়া কী পরিমাণ পণ্য উৎপাদন করছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। একইভাবে চীন ও মালয়েশিয়া থেকে কোরিয়া কী পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তারও সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায়নি।
উত্তর কোরিয়া নিজেদের তৈরি পণ্য বিক্রি করাতে চীনের রফতানি কমে গেছে। তারপরেও উত্তর কোরিয়ায় তাদের রফতানি পণ্যের বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উত্তর কোরিয়া বিশ্বের মধ্যে এমন এক ধরনের দেশ, যেখানে বিদেশীদের পরিদর্শন অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত মাসে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের একটি মুদি দোকানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল রয়টার্স-এর একটি দল। সেখানে তারা স্থানীয়ভাবে তৈরি করা পণ্য দেখতে পান।
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পানীয়, বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার ছিল ওই দোকানে। অন্য দর্শনার্থীরা টিনজাত পণ্য, কফি, মদ, টুথপেস্ট, কসমেটিকস, সাবান, বাই-সাইকেলসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতে দেখেছেন।
এক দোকানের সহকারী রি কিয়ং সুক (৩৩) জানান, নতুন একটা কারখানা চালু হয়েছে। এতে করে ব্র্যান্ডিং, প্যাকেজিং ও খাদ্যের মান বেড়েছে।
শারীরিক শিক্ষক কিম চল উং (৩৯) দোকান পরিদর্শন করে জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় উত্তর কোরিয়ার ফলের জুসে আমি আসল স্বাদ খুঁজে পায়। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার দেশীয় পণ্য অত্যাধুনিক মানের।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক গোষ্ঠী চসন এক্সচেঞ্জের আন্দ্রে আব্রাহামিয়ান ব্যবসা দক্ষতার ওপর উত্তর কোরিয়ার লোকজনদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের দিকে কিম জং উন আমদানি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করেছিলেন।
তবে এটা স্পষ্ট যে, চীন থেকে অনেকগুলো পণ্য আমদানি করতো উত্তর কোরিয়া। সেগুলো কেবল উচ্চমানের ভোগ্যপণ্যই ছিল না, খাবারের মতো পণ্যও ছিল।
কেএ/এসআইএস/আরআইপি