কলাতলী লাইট হাউস পাহাড়ে বসতঘর উচ্ছেদ
কক্সবাজার শহরের কলাতলী লাইট হাউস পাহাড় কেটে অবৈধভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর। অভিযানে বারটিরও বেশী কাঁচা ঘর উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। এসময় ৫ লক্ষ টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করে ধ্বংস করা হয়।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপি এ অভিযান চলে। এক সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারে সম্প্রতি জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে শহরের পর্যটন এলাকার কলাতলীর লাইট হাউজ সংলগ্ন ৪/৫টি ঐতিহ্যবাহী প্রচীনতম পাহাড় কেটে অবৈধভাবে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছে ভূমি দস্যুরা। প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে বসতবাড়ি তৈরি করার কারণে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে ঠিক অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ে বসবাসের কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কলাতলীতে গত এক সপ্তাহ ধরে ভূমিদস্যু নাছির বাহিনীর নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের দিয়ে রাত দিন পাহাড় কেটে সমতল ভূমি বানিয়ে তা প্লট তৈরি করে অধিক মূল্যে বিক্রি করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবিতে পাহাড় কেটে অবৈধ বসতবাড়ি নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে রোববার উচ্ছেদ অভিযানে নামে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর। অভিযানের অংশ হিসেবে কলাতলীর লাইট হাউজ পাহাড় কেটে নির্মিতব্য এক ডজনেরও বেশী বসতবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এক শ্রেণির প্রভাবশালী লোকজন রোহিঙ্গাদের দিয়ে পাহাড় কেটে তা প্লট বানিয়ে রাখছে। পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে তা নানা অপকর্মে ব্যবহার করছে। প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটার কারণে কক্সবাজারের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সৌর্ন্দয্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সরকারি জমিতে এদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মায়ানমারের নাগরিকসহ এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহলের কাছে চলে যাচ্ছে। যে কারণে সব কিছু বিবেচনা করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন অন্যান্য প্রশাসনের সহযোগিতায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি আরো জানান, এ অভিযান চলবে এবং কোনোভাবে পাহাড় কেটে বসবাস করতে দেয়া হবে না।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, পরিবেশ নষ্ট করে স্থাপনা তৈরি করতে দেয়া হবে না। পাহাড় কেটে পরিবেশ নষ্ট করার কারণে এবং পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসের কারণে প্রতি বছর পাহাড় ধসে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।
অভিযান চলাকালে জেলা প্রশাসনের দলের সঙ্গে অংশ নেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক মো হারুনুর রশীদ, মো. জাহিদ ও ভূমি অফিসের তহশীলদার শাহেদ উদ্দিন।
এমজেড/এমএএস/আরআই