ধর্মান্ধরা বাংলার রূপ ধ্বংস করতে চায় : মিজানুর রহমান


প্রকাশিত: ০৯:৪১ এএম, ২০ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বৈশাখ উদযাপন কৃষি ও কৃষকের সঙ্গে সম্পর্কিত এক চিরায়ত বাংলার উৎসব। এ উৎসবের বিশেষ দিক হচ্ছে সার্বজনীনতা। ধর্মান্ধরা এ সার্বজনীনতা মানতে পারছে না। তারা বিভক্তি তৈরি করতে চায়। দেশের সুদৃঢ় সাংস্কৃতিক ঐক্যের ফাটল ধরাতে চায়। ভয় দেখিয়ে পহেলা বৈশাখের সার্বজনীন রূপকে ধ্বংস করতে চায়।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান একথা বলেন। এ সময় তিনি বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) টিএসসিতে নারীর যৌন হয়রানির ঘটনায় ধর্মান্ধ, মৌলবাদী গোষ্ঠীকে দায়ী করে জড়িতদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

মিজানুর রহমান বলেন, দেশের ধর্মান্ধ, মৌলবাদী গোষ্ঠী জনপরিসরে নারীর উপস্থিতি ও অংশগ্রহণকে মেনে নিতে পারছে না। তারা এতে এক ধরনের ভয় বা আতঙ্কবোধ করছে। এটাই তাদের উদ্বেগের মূল কারণ। তারা নারীশক্তিকে ভয় পায় বলেই ভয় দেখায়।

তিনি বলেন, পুরুষতন্ত্র আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নির্মাণ করছে, মেরামত করছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করছে। পুরুষতন্ত্র নারীর চলাফেরার ক্ষেত্রকে নির্ধারণ করছে। যেমন- রাজপথ পুরুষের, টিএসসি পুরুষের, সংসদ পুরুষের। ফলে কল্পিত এ পুরুষ রাজ্যে যখন নারী ঢুকে পড়ছে তখনই তারা বিচলিত বোধ করছে।

তিনি নারীর প্রতি যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত এসব সহিংস পুরুষদের ‘বুনো শুয়োর’-এর সাথে তুলনা করে বলেন, পুরুষতন্ত্র তাদের ধর্মান্ধতা ও অপরিশোধিত মনুষ্যরূপ দানবে পরিণত করেছে। ভয় দেখিয়ে, শ্লীলতাহানি করে তারা বোঝাতে চায়, এ জায়গা তোমার নয়।

পুলিশের ভূমিকা হতাশাজনক উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, সাংবাদিকের কাছ থেকে পাওয়া ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশের মধ্যে যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে তা যেন নিছক লোক দেখানো না হয়। কমিশন স্পষ্ট করে বলতে চায়, অপরাধী যেই হোক না কেন- তাকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে কালক্ষেপন বা দীর্ঘসূত্রতা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিরোধে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করতে তিনি সব প্রগতিশীল সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এসময় অন্যদের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব টিচার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক মানবাধিকার কর্মী অ্যারোমা দত্ত এবং মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।