চট্টগ্রামে ৫৯৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ


প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৭১৯টির মধ্যে ৫৯৫টি ভোট কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ প্রশাসন। এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ দেয়ার পাশাপাশি বাইরে সার্বক্ষণিক ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর চারটি থানা এলাকার সব ভোট কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। থানাগুলো হচ্ছে, কোতয়ালি, বায়েজিদ বোস্তামি, চকবাজার এবং আকবর শাহ।

জানা গেছে, ভোট কেন্দ্র চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে পুলিশ। এগুলো হচ্ছে, অতীতে কোনো সংঘাত-দখল কিংবা ব্যালটবাক্স ছিনতাই হয়েছে কিনা, কেন্দ্র প্রার্থীর বাড়ির আশেপাশে কিনা এবং ভোট কেন্দ্রের উপর প্রার্থীদের প্রভাব কেমন রয়েছে।

সর্বমোট ৭১৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে নগরীর ১৫ থানা এলাকার মধ্যে পড়েছে ৭০৭টি কেন্দ্র। নগরীর কর্ণফুলী থানা এলাকা এখনও সিটি কর্পোরেশনের আওতাভূক্ত নয়। বাকি ১২টি কেন্দ্র হাটহাজারী উপজেলায়। এদের মধ্যে ৭০৭টি কেন্দ্রের মধ্যে নগর পুলিশ ৫৯১টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

আর জেলা পুলিশ ১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪টিকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করছে। কোতয়ালি থানা এলাকায় মোট ৮৪টি ভোট কেন্দ্র আছে। বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় ৬১টি এবং আকবর শাহ থানা এলাকায় ২৭টি ভোট কেন্দ্র আছে। এ তিন থানার সব ভোট কেন্দ্রকেই পুলিশ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, কোতয়ালি থানা এলাকায় একজন মেয়র প্রার্থীর পৈতৃক নিবাস। তার বাড়ির সামনেই একটি ভোট কেন্দ্র আছে। তার মূল নির্বাচনী ক্যাম্পও কোতয়ালি থানা এলাকায়। কোতয়ালি থানার আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, রাজাপুকুর লেইন, রহমতগঞ্জ, দেওয়ানজী পুকুর পাড়, জামালখান, বদরপাতিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তরুণ-যুবকদের মধ্যে তার প্রভাব রয়েছে। এ কারণে এসব এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত ভাবতে পারছেনা পুলিশ।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো.আব্দুল জলিল মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, ৭১৯টি কেন্দ্রের মধ্যে আমরা ৫৯৫টিকে ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ মানেই যে সংঘাতের আশংকা আছে তা নয়। এরপরও আমরা অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স দেব। প্রত্যেক কেন্দ্রে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার স্ট্যান্ডবাই রাখব।

এছাড়া ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটকে ঘিরে বায়েজিদ ও আকবর শাহ থানা এলাকায় ওই মেয়র প্রার্থীর বেশ প্রভাব আছে। সম্প্রতি শেরশাহ এলাকায় প্রতিদ্বন্ধি মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার ঘটনাও ঘটেছে। স্বাভাবিক সময়েও এ দু’টি এলাকায় প্রায়ই রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ দু’টি থানা এলাকায়ও নির্বাচনের দিন সংঘাত হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। এছাড়া জামায়াত অধ্যুষিত নগরীর চকবাজার থানা এলাকার ২৪টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলোকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।

সিএমপি’র দক্ষিণ জোনে চার থানার মধ্যে বাকলিয়া থানার ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৮টি, সদরঘাট থানার ৩৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৫টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। বাকি দু’টি থানা হচ্ছে কোতয়ালি ও চকবাজার। উত্তর জোনে চার থানার মধ্যে পাঁচলাইশ থানার ৪০টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৬টি, খুলশী থানার ৫৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৯টি, চান্দগাঁও থানার ৬৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টিকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে পুলিশ।
বাকি একটি থানা হচ্ছে বায়েজিদ বোস্তামি।

পশ্চিম জোনে চারটি থানার মধ্যে ডবলমুরিং থানায় ৫৮টির মধ্যে ৫৫টি, হালিশহর থানায় ৪৬টির মধ্যে ৩৮টি, পাহাড়তলী থানায় ৩৮টির মধ্যে ৩৪টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করছে পুলিশ। বাকি একটি থানা হচ্ছে আকবর শাহ থানা।

বন্দর জোনে চারটি থানার মধ্যে বন্দর থানায় ৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৩টি, ইপিজেড থানায় ৪৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৬টি এবং পতেঙ্গা থানায় ২৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫টিকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে পুলিশ। বাকি একটি থানা কর্ণফুলী সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত নয়।

এছাড়া জেলা পুলিশের অধীনে হাটহাজারী থানার ১২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এমএএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।