বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে নতুন নীতিমালা হচ্ছে সৌদিতে


প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ২১ মার্চ ২০১৭

কর্মক্ষেত্রে দেশীয় শ্রমিকদের বেশি পরিমাণে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে বিদেশি শ্রমিকদের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপের পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি আরব। বেকারত্বের হার কমিয়ে আনতে কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সৌদি সরকার।

মঙ্গলবার সরকারি একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটিতে বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২০ সালের মধ্যে এ হার ৯ শতাংশে কমিয়ে আনার মাধ্যমে গত বছর দেশটিতে যে নতুন অর্থনৈতিক সংস্কার আনা হয়েছে তার প্রথম ধাপ অর্জনে এটি সহায়তা করবে।

সৌদি সরকারের এই নতুন পরিকল্পনা দেশটির কোম্পানিগুলোতে কম বেতনে বিদেশি শ্রমিকদের চাকরি ব্যবস্থাকে কঠিন করে তুলতে পারে। এর প্রভাবে দেশটির অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যে সংস্কার আনা হয়েছে তা বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য বিভাগে সংকট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যেমন- উন্নয়নশীল বেসরকারি খাতের ব্যবসা-বাণিজ্য ও তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার যে পরিকল্পনা আছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব সেক্টরে স্বল্প বেতনে বিদেশি শ্রমিকরা কাজ করছে।

নতুন এ আইন দেশটিতে কর্মরত এক কোটি ২০ লাখ বিদেশি শ্রমিকের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এদের অনেকেই প্রায় ২ কোটি সৌদি নাগরিকের পরিত্যাজ্য কঠোর শ্রমসাধ্য, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ অত্যন্ত স্বল্প বেতনে করছেন। সৌদি কর্মীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়।

২০১১ সাল সৌদি সরকার নিতাকাত নামে নতুন একটি কর্মসূচির উদ্বোধন করে। এতে কর্মক্ষেত্রে সৌদি নাগরিকদের অনুপাতের ওপর কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন গ্রেডে বিভক্ত করা হয়। উচ্চ গ্রেডপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোকে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে ভিসা বা লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজের সময় অগ্রাধিকার দেয়া হয়। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের এই কর্মসূচির আওতায় কোনো কোম্পানি নিম্ন গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত হলে তাদের জরিমানা গুণতে হয়।

নতুন এই শ্রম নীতি অনুযায়ী, ৫০০ থেকে দুই হাজার ৯৯৯ শ্রমিক বিশিষ্ট নির্মাণ খাতের প্রতিষ্ঠানে একশ ভাগ সৌদি শ্রমিক নিযুক্ত করা হলে; ওই প্রতিষ্ঠান প্লাটিনাম ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত হবে। যদি ১০ শতাংশ সৌদি নাগরিককে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে ‘লোয়ার গ্রিন’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত হবে। বর্তমানে বিদ্যমান নীতিমালায় কোনো কোম্পানিতে ১৬ শতাংশ সৌদি কর্মরত থাকলে প্লাটিনাম এবং ৬ শতাংশ থাকলে লোয়ার গ্রিনের আওতায় পড়ছে।

দেশটির খুচরা সেক্টরের ৩৫ শতাংশ কোম্পানি প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ও ২৪ শতাংশ লোয়ার গ্রিনের অন্তর্ভুক্ত। সৌদি আরবের অন্যান্য সেক্টরেও একই ধরনের নীতিমালা প্রয়োগ করা হবে। নতুন এই কঠোর নীতি দেশটির শ্রমমন্ত্রী আলি বিন নাসের আল-গাফিস অনুমোদন দিয়েছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারি ঘোষণা না আসায় পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে দেশটির একটি সূত্র বলছে, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন এই নীতিমালা কার্যকর হবে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসআইএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।