উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বিজেপির বিতর্কিত সেই নেতা
ভারতের উত্তরপ্রদেশ অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করে ব্যাপক সমালোচিত ও বিতর্কিত বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ। শনিবার বিকেলে দলটির ৩১২ বিধায়কের সঙ্গে রাজ্যের রাজধানী লখনউয়ে বৈঠকে বসেন আদিত্য। এই বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
২০০৫ সালে রাজ্যের একটি গ্রামের অন্তত ৫ হাজার মুসলমানকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে সেসময় দেশ ও দেশের বাইরে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন কট্টরপন্থী বিজেপির এই নেতা।
লখনউয়ের স্মৃতি উপভান কমপ্লেক্সে রোববার দুপুর সোয়া ২টার দিকে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেবেন বিজেপির এই নেতা। অনুষ্ঠানে বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে শপথ নেবেন তিনি। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন রাজ্য বিজেপির প্রেসিডেন্ট কেশব প্রসাদ মৌর্য ও দীনেশ শর্মা।
উত্তরপ্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে পূর্বাঞ্চলের একটি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আদিত্যনাথের নাম শনিবার বিকেল থেকে সবার মুখে মুখে ঘুরতে থাকে। সকালের দিকে যোগী আদিত্যনাথের সমর্থকরা তাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়ে মিছিল করেন। এই বার্তা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করতে যান রাজ্য বিজেপির প্রধান কেশব প্রসাদ মৌর্যসহ দলের শীর্ষস্থানীয় বিধায়কেরা।
সূত্র বলছে, যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া থেকে ঠেকাতে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সংঘের (আরএসএস) নেতারা ভেটো দেন।
৪০৩ আসনের উত্তর প্রদেশ বিধানসভায় ৩১২টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। ফলপ্রকাশের ৭ দিন পরও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। মুখ্যমন্ত্রীর পদে প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নাম উঠে এসেছিল। বিজেপির মতাদর্শগত কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের (আরএসএস) পক্ষ থেকেও রাজনাথের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। যদিও রাজনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জল্পনা নাকচ করে দিয়ে আসছিলেন।
এদিকে, সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর দেশটির পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ শেষের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। মনোহর পারিকর কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদ ছেড়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। পারিকর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়ার পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগের দায়িত্বে হেভিওয়েট নতুন কোনো নেতাকে দেয়ার কথা ভাবছেন নরেন্দ্র মোদি সরকার। আর এই দৌড়ে পীযূষ গোয়েল, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মতো বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ‘ক্যাবিনেট’ স্তরে উন্নীত করা হতে পারে বলেও নয়াদিল্লির একটি সূত্র জানিয়েছে।
গণিতে স্নাতক করা আদিত্যনাথের মূল নাম অজয় সিং বিস্ত। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ১৯৯৮ সালে বিজেপির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১২তম লোকসভার কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলেন যোগী। ২০০২ সালে হিন্দু যুব বাহিনী নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন আদিত্যনাথ। সেসময় তিনি বলেন, দাঙ্গার সময় সশস্ত্র পরিস্থিতিতে হিন্দুদের রক্ষা করার প্রয়োজনেই এই সংগঠন তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস।
এসআইএস/আরআইপি