আফগানিস্তানে রুশ হস্তক্ষেপের আশঙ্কা
আফগানিস্তানে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অগ্রগতি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ব্যর্থ হলে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জেনারেলকে সতর্ক করে দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, আফগানিস্তানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পাক সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা সৈন্য কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, পশ্চিমারা এখন নিয়ন্ত্রণ হারানোর মুখোমুখি।
আফগানিস্তানে আইএস এবং তালেবান শক্তি লাভ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিরীয় ধাঁচের হস্তক্ষেপ চালাতে প্রলুব্ধ হতে পারে রাশিয়া। এই মুহূর্তে মধ্য এশিয়া রক্ষার অজুহাতে আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপ করতে পারে মস্কো।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সম্প্রতি আফগান মিশন কমান্ডার জেনারেল জন নিকোলসন ও ট্রাম্পের নিয়োগকৃত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সাবেক অবসরপ্রাপ্ত সেনা জেনারেল জেমস ম্যাটিসের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হয়েছে।
তালেবানের পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আফগান সেনাবাহিনী ব্যর্থ হচ্ছে বলে গত মাসে জেনারেল নিকোলসন স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এই পুনরুত্থান তালেবানের জন্য এক ধরনের বিজয়। আমরা জেনারেল ম্যাটিসকে জানিয়েছি, আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং যদি সঠিক কাজ না করা হয় তাহলে এটি ঘটবে। এ নিয়ে আমেরিকা বড় ধরনের সঙ্কটে থাকবে।
জেনারেল নিকোলসন বলেন, আইএস সেখানে তাদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। তারা যদি সিরিয়া এবং ইরাক ত্যাগ করে তাহলে তাদের একত্রিত হওয়ার পরবর্তী গন্তব্য হবে আফগানিস্তান।
এদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত এলাকা বন্ধ করে না দেয়ায় আফগানিস্তানের সমালোচনা করে ইসলামাবাদ বলছে, আফগানিস্তানের ভেতরে থেকে উভয় দেশেই হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। তবে আফগান সেনাবাহিনীর সামর্থ্য সীমিত বলে স্বীকার করেছে পাকিস্তান।
পাক সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বলছে, আফগান সেনাবাহিনীতে সাড়ে ৩ লাখ সদস্য রয়েছে। কিন্তু মিশনে লড়াইয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন সেনা রয়েছে মাত্র ২০ হাজার। এছাড়া তাদের জেনারেল রয়েছে প্রায় এক হাজার। এদের অধিকাংশকে নিয়োগে মেধার চেয়ে গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক পরিচয়কেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
এসআইএস/পিআর