বাংলাদেশি ওষুধে ব্রিটিশ নারীর রোগমুক্তি


প্রকাশিত: ০৩:৩৯ এএম, ০২ মার্চ ২০১৭

বিশ্বের অনেক দেশেই অনলাইনে ওষুধ কেনা-বেচা এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রেসক্রিপশন না পাওয়া, ডাক্তার দেখাতে না পারা, বিশেষ করে ওষুধের দাম বেশি হওয়ার কারণে অনলাইনে ওষুধ কিনছেন অনেকেই। খবর বিবিসির।

জো শারাম নামে ব্রিটিশ এক নারীও কম দামে ওষুধ কিনতে অনলাইনের ওপর নির্ভর করেছিলেন। বাংলাদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে হেপাটাইটিস সি নিরাময়ের ওষুধ কিনেছিলেন জো শারাম।

ইংল্যান্ডের তৈরি এনএইচএস ওষুধ সেখানে সহজে পাওয়া গেলেও অনেক উচ্চমূল্যের হবার কারণে এগুলো শুধুমাত্র বেশি অসুস্থ রোগীদের দেয়া হয়ে থাকে।

যুক্তরাজ্যে জো শারামের মতো হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত প্রায় দুই লাখ পনের হাজারের মতো রোগী রয়েছে। শারামের বয়স যখন ২০ বছর তখন তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। ভাইরাসটি শনাক্ত না হওয়ায় অনেকের মতোই এই ভাইরাস বহন করেই বছরের পর বছর এভাবেই পার করছিলেন তিনি।

জো বলেন, ‘আমি অফিসের চেয়ারেই ঘুমিয়ে পড়তাম, স্মৃতিজনিত অনেক সমস্যাও হচ্ছিল আমার। এছাড়াও হজমে সমস্যা হচ্ছিল আর নিজের ভেতরে ঘৃণার মনোভাব জাগছিল। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের হলো আমার দেহে হেপাটাইসিস সি ভাইরাস রয়েছে। তখন বুঝলাম এ কারণেই আমি বহু বছর ধরে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছি।’

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নিরাময়ে যে ওষুধ পাওয়া যায় ইংল্যান্ডে তার খরচ জোগাতে মোটামুটি হিমশিম খেতে হয় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে। প্রতি রোগীর জন্য প্রায় দশ হাজার পাউন্ড খরচ হয় সংস্থাটির। আর এ কারণে শুধুমাত্র বেশি অসুস্থ রোগীদেরই এ ওষুধ দেয়া হয়।

জো শারাম খুব বেশি অসুস্থ ছিলেন না বলে তিনিও ওই ওষুধ কিনতে পারেননি। সে কারণে তিনি নির্ভর করলেন অনলাইনের ওপর। অনলাইনেই সস্তা দামের ওষুধ কিনলেন বাংলাদেশ থেকে। এতে তার খরচ পড়েছিল প্রায় এক হাজার পাউন্ড।

কিন্তু ওই ওষুধ কাজ করবে কিনা সেটা না জেনে কিভাবে তিনি সেটা কিনলেন এমন প্রশ্নের জবাবে জো বলেন, ‘আসলে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। শারীরিক সমস্যাগুলো নিয়ে চলতে আর ভালো লাগছিলো না। আসলে এটা আমার পছন্দ ছিল। এটা অনেকটা বাতাসে কয়েন ছুঁড়ে দেবার মতো।

গত নভেম্বর মাসে তিনি তার ওষুধের কোর্স শেষ করেন। এরপর তিনি আবার কিছু পরীক্ষা করান। গত মাসের ১৮ তারিখে রিপোর্ট হাতে পেয়ে জো দেখেন তার রক্তে হেপাটিাইসিস সি ভাইরাসের কোনো লক্ষণ ধরা পড়েনি।

তিনি বলেন, ‘এখানে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো যে দামে ওষুধ বিক্রি করছে তার তুলনায় অনেক কম দামে আমি ওষুধ কিনলাম। অথচ সেটা কাজও করলো। আর প্রত্যেকেরই সুস্থ হবার অধিকার আছে, যদি সেটা সম্ভব হয়।

এই ঘটনার পর অনলাইনে বাংলাদেশি ওষুধের জনপ্রিয়তা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

টিটিএন/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।