গাড়ির সঙ্গেই ছুটল রাজুর দেহ


প্রকাশিত: ০৪:৩১ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বেপরোয়া গাড়িটির গতি দেখে চমকে উঠেছিল রাতের শহর। আশপাশের লোকজন বলাবলি করছিলেন, ‘কিছু একটা হয়ে গেলে আর রক্ষা থাকবে না।’ মুখের কথা শেষ না হতেই গাড়িটি ধাক্কা মারে এক পথচারীকে।

ভারতের বহরমপুরে কুমার হোস্টেলের সামনে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় লুটিয়ে পড়েন মোহন হাজরা (২৪) নামের এক পথচারী। এর রেষ কাটতে না কাটতেই ছাই রঙের গাড়িটির গতি আরও বেড়ে যায়। গোরাবাজার নিমতলার মোড়ে ফের এক সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মারে গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান রাজু শেখ (৩৮) নামের ওই যুবক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাইকেলটি গাড়ির বাঁ দিকে আটকে যায়। রাজুর শরীরও আটকে যায় সাইকেলের সঙ্গে। সেই অবস্থাতেই গাড়িটিকে ছুটতে দেখে শিউরে ওঠে আশেপাশের লোকজন। কিন্তু এতো অঘটন ঘটিয়েও হুশ ফেরেনি চালকের। পথচারী নিহত হওয়ার পরেও গাড়ি থামায়নি সে।

পুলিশ জানিয়েছে, কিছুদূর ওই অবস্থায় যাওয়ার পরে রাজুর দেহ ছিটকে যায়। পরে তার সাইকেলটি পাওয়া যায় বহরমপুর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মানকরা রেলগেটের কাছে।

মোহন হাজরা ও রাজু শেখ দু’জনে বহরমপুরের রঘুনাথতলা ও গোরাবাজারের  বাসিন্দা। রোববার রাতের ওই ঘটনার পর গাড়ির চালক সুরজিৎ হালদার ও তার সঙ্গী তারক দাসকে গ্রেফতার করেছে বেলডাঙা থানার পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘ওই দু’জনকেই মদ্যপ অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মদ খেয়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, পর পর ওই দু’টি দুর্ঘটনার পর গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন চালক। বহরমপুর থেকে তারা মানকরা রেলগেটে চলে যান। সেখানে গেট বন্ধ থাকায় তারা দু’টি গেট ভেঙে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে  বেলডাঙার দিকে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভাবতা রেলগেটে একাধিক লরি দাঁড়িয়ে থাকায় তারা আটকে যান। পুলিশ সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘চলন্ত গাড়ির সঙ্গে আটকে রয়েছে একটি দেহ ও সাইকেল। সাইকেলের সঙ্গে রাস্তার ঘর্ষণে আগুন বেরুচ্ছে। দৃশ্যটা মনে পড়লে এখনও শিউরে উঠছি।’

টিটিএন/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।