নারী-মদ দুইয়েই আসক্ত ছিলেন ইয়াহিয়া খান


প্রকাশিত: ০৩:৩৩ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ও সামরিক শাসক ছিলেন জেনারেল ইয়াহিয়া খান। তার আদেশেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালায়।

ওই সময় ইয়াহিয়া খানের এডিসি ও  স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন আর্শাদ সামি। সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত হয়েছে তার একটি সাক্ষাৎকার। যেখানে তিনি কথা বলেছেন, ইয়াহিয়া খানের নানা দিক নিয়ে।

এই সাক্ষাৎকারে মূলত তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজয়ের আগের দিনগুলো কেমন ছিল ইয়াহিয়া খানের।

এই সাক্ষাৎকারেরই একটি অংশে বলা হয়েছে, শুধু নারীতে নয়, সুরাতেও অসম্ভব আসক্ত ছিলেন জেনারেল ইয়াহিয়া। পার্টিতে যাওয়া ছিল তার একটা অন্যতম শখ।

একবার রাষ্ট্রপতি হিসাবে পূর্ব পাকিস্তানে গিয়েছিলেন জেনারেল ইয়াহিয়া। সঙ্গে ছিলেন আর্শাদ সামি খাঁ।

সামি বিবিসিকে বলেছেন, ‘ইয়াহিয়া এক দিন সন্ধ্যায় আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, পার্টিতে যাবে? আমি হ্যাঁ বলতেই তিনি জানতে চেয়েছিলেন আমি কোন গাড়ি ব্যবহার করি। মার্সিডিজের কথা বলতেই তিনি বলেছিলেন আজ অন্য কোনো গাড়ি নাও। ড্রাইভারকে বলে দেবে তোমার ঘরের পাশে পার্ক করে রাখতে। ড্রাইভারকে ছুটি দিয়ে দিও। ঠিক রাত ৯টা পাঁচ মিনিটে পিছনের বারান্দার কাছে এসে গাড়ির লাইট নিভিয়ে দেবে, পেছনের দরজাটা খুলে রাখবে। আমি ৯টা ১৫-তে গাড়িতে উঠব। একটা চাদর দিয়ে ঢেকে দেবে আমাকে। কেউ যেন বুঝতে না পারে গাড়িতে কে আছে।’

সেই মতোই জেনারেল ইয়াহিয়াকে নিয়ে ঢাকার রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে বেরিয়েছিলেন আর্শাদ। তবে কিছুদূর গিয়েই পেছন থেকে চালকের পাশের আসনে চলে আসেন ইয়াহিয়া। আরও একটু পরে তিনি বলেন ‘মিসেস’ খন্দকারের জন্য ফুল কিনতে হবে।

বন্ধু খন্দকারের বাড়িতে পৌঁছে নিজের হাতেই দরজায় বেল দিয়েছিলেন ইয়াহিয়া।

খন্দকার সাহেব তো দরজায় ইয়াহিয়া খানকে দেখে অবাক। তিনি ভাবতেও পারেননি যে সাইরেন না বাজিয়ে, লোকলস্কর না নিয়ে চুপচাপ ইয়াহিয়া তার বাড়িতে পৌঁছে যাবেন! তবে ইয়াহিয়া অবাক হয়ে যাওয়া বন্ধুকে বলেছিলেন, ‘কী কানু, তুমি ভেতরে যেতে বলবে না?’

ভারী চেহারা নিয়েও পার্টিতে খুব ভাল নাচতে পারতেন ইয়াহিয়া। সেই রাতে  খন্দকারের পার্টিতে যতজন নারী ছিলেন, প্রত্যেকের সঙ্গে নেচেছিলেন ইয়াহিয়া। মাঝে মাঝে আমাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে আমার ঘুম পাচ্ছে কী না।

এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।