৭ মন্ত্রীকে ন্যাম ভবন ছাড়ার নোটিশ


প্রকাশিত: ০৩:০৮ এএম, ১৯ আগস্ট ২০১৪

দশম জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার সাত মন্ত্রীকে ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে সংসদ কমিটি।
অভিযোগ রয়েছে, নবম ও দশম সংসদের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী একই সঙ্গে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে আবাসন সুবিধা ভোগ করে আসছেন।

এর আগে দশম সংসদের সকল সদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধান করতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে নির্দেশ দেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশের পর ন্যাম ভবনে ফ্ল্যাট দখলে রাখা মন্ত্রীদের মৌখিকভাবে এবং পরে নোটিশ দেওয়া হয়।

জাতীয় সংসদ ভবনে সোমবার সংসদ কমিটির তৃতীয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় কমিটি নোটিশ দেওয়ার পরেও ফ্ল্যাট না ছাড়াই ক্ষোভ প্রকাশ করে।

সংসদ সূত্রে জানা যায়, ন্যাম ভবন-৪ এর ৪০৭ নম্বর ফ্ল্যাট দখলে রেখেছেন নবম ও দশম সংসদের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, একই ভবনের ৭০১ নম্বর ফ্ল্যাট দখলে রয়েছে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দশম সংসদের ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ দখলে রেখেছেন একই ভবনের ৪০৩ নম্বর ফ্ল্যাট, ৪০২ নম্বর ফ্ল্যাট দখলে রেখেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ন্যাম ভবন-৬ এর ৯০৩ নম্বর ফ্ল্যাট দখলে রেখেছেন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. ছাইদুল হক, প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম।

বৈঠক শেষে সংসদ কমিটির সভাপতি ও চিফ হুইপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সকল সংসদ সদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। দশম সংসদে যারা মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন তাদের আর সংসদ সদস্যদের জন্য নির্ধারিত ভবনের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরও যারা ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট দখলে রেখেছেন তাদের কয়েকবার নোটিশ দেওয়ার পর এবার চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মো. আব্দুস শহীদ, নূর-ই-আলম চৌধুরী, সাগুফতা ইয়াসমিন, পঞ্চানন বিশ্বাস এবং ফজলে হোসেন বাদশা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ ও নাখালপাড়াস্থ সংসদ সদস্য ভবন এবং শেরেবাংলা নগর সদস্য ভবনের অফিস কক্ষের নিরাপত্তাসহ সংসদ ভবন এলাকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নিরাপত্তার ও পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউস্থ ১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬নং সংসদ সদস্য ভবন এবং নাখালপাড়াস্থ ১, ২ ও ৩নং সংসদ সদস্য ভবনের জন্য সংসদ সদস্য ভবনে বসবাসরত সংসদ সদস্য খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং সাগুফতা ইয়াসমিন, পঞ্চানন বিশ্বাস, শেখ হাফিজুর রহমান ও নূরুল ইসলাম ওমরকে সদস্য করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সোসাইটি গঠনের সুপারিশ করা হয়। সোসাইটি প্রয়োজনে সংসদ কমিটির সভাপতির পরামর্শে আরও দুই সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।

সম্প্রতি ভুয়া মেজর পরিচয়ে মাহমুদুল হাসান নামে এক ব্যক্তি সংসদে প্রবেশ করায় সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে কমিটি। এ সময় কমিটি ভুয়া পরিচয় প্রদান করে সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশ করার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা ব্যক্তিদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী সাব্যস্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের এবং সংসদ ভবন এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সুপারিশ করে।

বৈঠকে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ ও নাখালপাড়াস্থ সংসদ সদস্য ভবনের ফ্ল্যাটের হাউজ কিপিং সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সংসদ সদস্য ভবনের অব্যবহৃত আসবাবপত্রগুলোকে যত্রতত্র ফেলে না রেখে নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণের জন্য নাখালপাড়াস্থ সংসদ সদস্য ভবন এলাকায় আলাদা একটি স্থাপনা তৈরির সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া অব্যবহৃত আসবাবপত্রগুলো ব্যবহার উপযোগী করা অথবা প্রয়োজনে নিলামে বিক্রির পরামর্শ প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া সংসদ কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে যে সকল সংসদ সদস্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং ইতোমধ্যে অন্যত্র বাসা বরাদ্দ পেয়েছেন তাদের সংসদ সদস্য ভবনের ফ্ল্যাটে নতুন সংসদ সদস্যদের আবাসনের সুযোগ প্রদানের স্বার্থে সহযোগিতার পরামর্শ প্রদান করা হয়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।