নওগাঁয় রাম নবমী উৎসবে হাজারো ভক্তের ঢল


প্রকাশিত: ০৬:২৭ এএম, ২৯ মার্চ ২০১৫

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ঠাকুর মান্দা শ্রী-শ্রী রঘুনাথ জীউ মন্দিরে শুরু হয়েছে রাম নবমী উৎসব। প্রায় তিনশ বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে এ মন্দিরটি।  মন্দিরে ভগবান শ্রী রাম চন্দ্রের বিগ্রহে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার নানা ধর্মের লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। শনিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে লক্ষন ভোজের মধ্য দিয়ে।

উৎসবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে সনাতন ধর্মের হাজারো রামভক্ত ও পূন্যার্থীরা মনবাসনা পূরনের আশায় ছুটে আসছেন। তারা পূন্যস্নান সেরে মাথায় পদ্মপাতা ও মাটির হাড়িতে ভোগের সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে এসে ভোগ নিবেদন করছেন।

`পুন্ড্র` জনপদের অন্যতম প্রাচীন জনপদ হিসেবে ঠাকুরমান্দার ঐতিহাসিকভাবে পরিচিতি রয়েছে। পাল আমলের বিভিন্ন প্রত্ন নিদর্শন এ জনপদ থেকে আবিষ্কৃত হয়। জনপদটিতে রয়েছে হিন্দু তীর্থের প্রাচীন রঘুনাথ জীউ মন্দির। তখন হিন্দু পুণ্যার্থীসহ লাখো মানুষের ঢল নামে এই জনপদে।

মান্দা উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ঐতিহাসিক ঠাকুর মান্দা জনপদ। আত্রাই নদীর অন্যতম শাখা শিব নদী ও বিল মান্দার পশ্চিম তীরে জনপদটির অবস্থান। জনপদটি  নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, নওগাঁ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

প্রতি বছর রাম নবমী পূজার দিনে জন্মান্ধ শিশুদের আনা হয় এখানে। হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও অন্য সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সন্তানদের নিয়ে আসেন এ মন্দিরে। সে আশায় ছোট্ট শিশু থেকে নানা বয়সের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সারা দিন রেখে দেওয়া হয় মন্দির প্রাঙ্গণে একটি নির্ধারিত স্থানে। মানত করেন তারা। প্রতিবন্ধীরা ভালো হয়ে ফেরেন এই রামমন্দির থেকে।

অনেকে সপ্তাহব্যাপী মন্দিরের পাশে মাঠে তাঁবু গেড়েও অবস্থান করেন। ভক্তবৃন্দের ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে রাতে পদাবলী কীর্তনেরও আসর বসানো হয়। মন্দিরটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাম নবমীর উৎসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের সার্বজনীন উৎসব হয়ে উঠেছে। এ উপলক্ষ্যে মন্দিরটিকে ঘিরে সেখানে জুড়ে বসেছে এক মেলা।

মন্দির কমিটির সভাপতি চন্দন কুমার মৈত্র জানান, নওগাঁর এ প্রাচীন মন্দিরটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হলে রঘুনাথ জীউ মন্দিরের গুরুত্ব আরও বাড়বে।

এসএইচএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।