মধুপুরে পানির সঙ্কট চরমে


প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ২৩ মার্চ ২০১৫

দীর্ঘ অনাবৃষ্টি ও খরায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় পানির চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পাড়া-মহল্লার নারীরা দূর-দূরান্ত থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। অনেক এলাকায় গোসল, ধোয়ামোছা ও নিত্যব্যবহার্য কাজে প্রয়োজনীয় পানি না মেলায় দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলায় একটি পৌরসভা ও দশ ইউনিয়নের সাতটি পাহাড়ি এলাকায় একটি গভীর নলকূপ অবস্থিত। দেশের সমভূমি থেকে বেশ উঁচুতে অবস্থিত মধুপুর গড় এলাকার এসব ইউনিয়নে গভীর নলকূপ ছাড়া পানি উঠানো যায় না। সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি এলাকায় পানির স্তর দুই থেকে আড়াইশ ফিট নিচে চলে যায়।

কিন্তু এবার পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিপত্তি। কিছু স্থানে তিনশ ফিটের কম গভীরে পানির ভালো স্তর পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে গভীর নলকূপ থেকেও পানি পেতে বেগ পেতে হচ্ছে।
 
সমতল এলাকায় অবস্থিত মধুপুর পৌরসভা, মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন এবং আলোকদিয়া ইউনিয়নে শতকরা ৯৫ ভাগ হস্তচালিত অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না।

রাধানগর গ্রামের কলেজ শিক্ষক ময়েনউদ্দীন জানান, রাধানগর গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়ি, কুড়াগাছা, পিরোজপুর, মোমিনপুর, জাগিরাচালা, ও চানপুর গ্রামের বাসিন্দারা খাবার, গোসল ও গৃহস্থালি কাজে পানি পেতে নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ফলে শহরের মাস্টার পাড়া, টেকি পাড়া, চাড়ালজানি ও ঘোষ পল্লীর সহস্রাধিক নলকূপ বিকল হয়ে পড়ায় পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট বিরাজ করছে।

পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো জমিতে সেচ কাজে নিয়োজিত শত শত অগভীর সেচপাম্প ১৫/২০ ফিট গর্ত খুঁড়ে বসিয়ে চালাতে হচ্ছে। এক মাত্র নদী বংশাই, বৃহৎ বিল হাওদাসহ সব বিল, জলাশয় ও পুকুর বহু আগে শুকিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুদের গোসল নিয়েও স্থানীয়রা চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রায় দুই দশকের দ্বিতীয় শ্রেণির মধুপুর পৌর শহরে সরকারিভাবে পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। দুই বছর আগে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তিন লাখ টাকা ব্যয়ে পাম্প স্টেশন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করলেও পানি সরবরাহের কাজ এখনো বাকি রয়েছে।

পৌর শহরের দৈনিক বাজারের মুরগি বিক্রয় কেন্দ্রগুলোর সামনে প্রায় আট মাস আগে পানি সরবরাহে পাম্প স্থাপনের জন্য বোর্ডিং করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও উত্তর জানেন না কেউ।

মধুপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী  তোফাজ্জল হোসেন জানান, পুনঃখনন বাবদ বাজেট না থাকায় গত ৫/৭ বছরে পাহাড়ি এলাকার গভীর-অগভীর ২৩৭টি বিকল হওয়া নলকূপ সচল করা যাচ্ছেনা।

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।