আবারো ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর চেষ্টা


প্রকাশিত: ০৩:১২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়াকে হিমঘর থেকে বের করে আনার নতুন এক চেষ্টা শুরু করেছে ফ্রান্স। রোববার প্যারিসে  বিশ্বের ৭০টির মত দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।

কিন্তু এ ধরনের সম্মেলন আদৌ কোনো ফলপ্রসূ হবে কি না; তা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মাঝে সন্দেহ রয়েছে। কারণ ইসরায়েল প্যারিসের এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না, বরং এটিকে নিয়ে তামাশা করেছে তারা।

অন্যদিকে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি এখনও অস্পষ্ট। রাজধানী প্যারিসে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ মার্ক অ্যারো বলেছেন, এর তিনটি লক্ষ্য।

‘প্রথমত- দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারকে পুনরায় ব্যক্ত করা। দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট সমাধানের জন্যে সরাসরি আলোচনা করতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন দুই পক্ষকেই উৎসাহিত করা। তৃতীয়ত- ভবিষ্যতের জন্যে একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করা।

ফ্রান্স বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে গুরুতর এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এমন এক অবিশ্বাস ও অনাস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যে; নতুন করে আলোচনায় না বসলে বড় ধরনের সহিংসতা অবশ্যম্ভাবী। সর্বশেষ সংলাপ হয়েছিল ২০১৪ সালে।

ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, আমাদের সবার দায়িত্ব হলো ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা। আমরা জানি এই কাজটা কঠিন। কিন্তু এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সঙ্কটের দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক সমাধান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

ফ্রান্সের এই বক্তব্যের সঙ্গে কিছুটা একমত ফিলিস্তিন। তারা সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এসব মানতে রাজি নয়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ সম্মেলনকে মেনে নিতে পারেননি। ইসরায়েল বলছে, তাদের বিরুদ্ধেই এই সম্মেলন ডাকা হয়েছে। নেতানিয়াহু বলেন, প্যারিসে আজ যে সম্মেলন হচ্ছে তার কোনো তাৎপর্য নেই। ফরাসী ও ফিলিস্তিনিরা মিলে এটা করেছে।

তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইসরায়েলের ওপর কিছু কিছু জিনিস চাপিয়ে দেয়া যা ইসরায়েলের প্রয়োজন নেই। এর ফলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ব্যবধান আরো বাড়বে।

এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা পরিবর্তনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বড় রকমের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি ভেঙে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নিতে পারেন। ফ্রান্সে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক এই সম্মেলনে যোগ দেয়া অনেকেই একে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন। ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেমের অধিগ্রহণকে বহু দেশই মেনে নিতে পারেনি। সেকারণে তেল আবিবেই তাদের দূতাবাস কাজ করছে।

জাতিসংঘও জেরুজালেমকে ইসরায়েলের অধিকৃত এলাকা বলে মনে করে। সেখানে ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে জতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।