অতিরিক্ত ঘাম হলে কী করবেন
মানুষের শরীর ঘামবেই। না ঘামলে তা বরং অস্বাভাবিক। স্বাভাবিক মাত্রার ঘাম কোন রোগ নয়। তবে যখন অন্যান্য সবার চেয়ে বেশি মাত্রায় ঘামের সৃষ্টি হবে, বুঝতে হবে কোন সমস্যা রয়েছে। আর এই সমস্যা হল পানিশূন্যতা।
ঘাম হলে শরীরের অভ্যন্তরে জমা হওয়া বাড়তি তাপ ধীরে ধীরে কমে যায়। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ঘর্মগ্রন্থি বেশি করে ঘাম উৎপাদন করতে থাকে। যেমন ব্যায়াম করলে বা অতিরিক্ত পরিশ্রম করার কারনে ঘাম। আবার অনেক সময় খাবারের কারনেও ঘামের উৎপন্ন হয়। যেমন, বাসি, তেল-চর্বি বা বেশি ঝালযুক্ত খাবারের কারনে সৃষ্ট ঘাম।
মূলত ভিটামিন বি১২-এর অভাবে হাইপ্যারাইড্রসিস নামক রোগটি হয়ে থাকে। তাই বেশি ঘামের সমস্যা থাকলে ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন বি১২ সহ ভিটামিন বি পরিবার যেমন বি-১, বি-২, বি-৩, বি-৫ সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। সেই সাথে বেশি বেশি করে পানি পান এবং বার বার হাত পা মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। অনেকসময় শারীরিক দুর্বলতার কারনেও শরীরে অতিরিক্ত ঘামের সৃষ্টি হয়। তাই সেই সমস্যা দূর করতে বেশি করে পুষ্টিকর খাবার, শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে।
চা ঘাম দূর করতে প্রাকৃতিক ওষুধ স্বরূপ কাজ করে। এতে বিদ্যমান টনিক এসিড ঘামবিরোধী ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তাই দেড় লিটার পানির মধ্যে পাঁচটি চায়ের ব্যাগ মিশিয়ে তার মধ্যে ১০-১৫ মিনিট হাত-পা ভিজিয়ে রাখলে, হাত পায়ে সৃষ্ট অতিরিক্ত ঘাম দূর হয়। গরমের সময় অন্যান্য চায়ের বদলে সবুজ চা খাওয়া ভালো। এতে উপকার পাওয়া যায়।
গরমের সময় বেশি বেশি পানি পান করা ভালো। কিন্তু ভালো ফলাফল পেতে শুধু পানি নয়, তার সাথে লবণ, চিনি ও পাতিলেবু মিশিয়ে শরবত করে খেলে ভালো হয়। কেননা ঘামের সঙ্গে কিছু দূষিত পদার্থ ও তার সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সোডিয়াম ও যৎসামান্য পটাশিয়াম ও বাইকার্বোনেট শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সোডিয়াম বাইকার্বোনেটের তারতম্যের জন্য শরীর অত্যন্ত দুর্বল ও অস্থির লাগে। এসব প্রতিরোধ করতে যথাযথ বিভিন্ন ফলের শরবত খুবই কার্যকরী।
তবে শুধু ফলের শরবত খেলেই হবে না, তাজা আস্ত ফল খাওয়াও জরুরি। ফলে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর তরতাজা রাখতে সাহায্য করে। জামরুল, তরমুজ, লিচু, শশা, পাকা পেঁপে, পাকা আম যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এ আছে। পাকা আমের ভিটামিন `এ` শরীরে এনার্জি ধরে রাখে।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত মসলাদার খাবারের বদলে মুরগির স্টু, মাছের পাতলা ঝোল জাতীয় খাবার গরমে শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে। আর এসময় আয়োডিনযুক্ত খাবার যেমন- এস্পারাগাস, ব্রকোলি, গরুর গোশত, যকৃৎ, পেঁয়াজ, আলগা কাঁচা খাবার লবণ প্রভৃতি থেকে বিরত থাকা ভালো, এগুলো অতিরিক্ত খেলে শরীরে বেশি ঘামের সৃষ্টি হয়।
এইচএন/পিআর