বৃত্তাকার রেলপথ হচ্ছে ঢাকার চারপাশে


প্রকাশিত: ০৪:১২ এএম, ২১ মার্চ ২০১৫

বৃত্তাকার রেলপথ হচ্ছে রাজধানী ঢাকা শহরের চারদিকে। ঢাকার যানযট নিরসনে এ রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলপথ বিভাগ ইতিমধ্যে এর সম্ভাব্যতা যাচাই করার প্রস্তাবনা তৈরি করছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রস্তাবনা আগামী সপ্তাহে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর কথা রয়েছে। প্রস্তাবনাটি অনুমোদন পেলে শুরু হবে সম্ভাব্য সমীক্ষা যাচাইয়ের কাজ।

এ বিষয়ে রেলওয়ে সচিব মো. মুনসুর আলী শিকদার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাক্রমে রেলপথ মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩২ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও এ প্রকল্প নির্মাণে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হতে পারে। রাজধানীর চারপাশে, অর্থাৎ যেসব এলাকা হয়ে রেললাইনটি স্থাপিত হবে সেই সব এলাকায় বাসাবাড়িসহ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। জমি অধিগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান করতে হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর চারদিকে ‘সার্কুলার রেল পথ’ বাস্তবায়ন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। সেই মোতাবেক গত বছরের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ঢাকার চতুর্দিকে সার্কুলার ট্রেন চালু করার নির্দেশ দেন। প্রকল্প যাচাইয়ের লক্ষ্যে ১৬-১৮ মার্চ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষাবিষয়ক মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। প্রাথমিকভাবে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা।

রেলপথ মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প যাচাই কমিটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর চারদিকে ‘সার্কুলার রেলপথটি’ বৃত্তাকার হিসেবে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। টঙ্গী হয়ে তুরাগ, আদাবর, আমিনবাজার, কেরানীগঞ্জ, তারাব, হাজারীবাগ, লালবাগ, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, ইস্টার্ন বাইপাস রোড, পূর্বাঞ্চল হয়ে পুনরায় টঙ্গীতে সংযুক্ত হবে।

রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশলী মনজুরুল ইসলাম জানান, প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। মে ২০১৫ হতে জানুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিবেচ্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে ঢাকার চারদিকে সার্কুলার রেললাইন নির্মাণের অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উপযোগিতা নির্ধারণে আলোচনা হয়েছে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে বৃহৎ আকারে বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে যেখানে উন্নয়ন সহযোগী দেশ, সংস্থার অর্থায়ন প্রয়োজন হবে। সে বিবেচনায় বর্তমানে জিওবি অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

রেলওয়ে মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন জানান, রাজধানীর চারদিকে বৃত্তাকার রেললাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে যানজটের স্থায়ী নিরসন হবে। একই সঙ্গে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও এ পথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য রিপোর্টটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদিত হলে প্রকল্প যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষার পর প্রকল্পের ব্যয় আরও বাড়তে পারে।

রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক জানান, ঢাকার চারপাশে সার্কুলার রেলপথ নির্মাণের মধ্য দিয়ে রাজধানীর চিরচেনা যানজট নিরসন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক এ প্রকল্প বাস্তবায়নে রেলপথ মন্ত্রণালয় যথাযথ কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগী দেশ, সংস্থার অর্থায়ন প্রয়োজন হবে। সূত্র : যুগান্তর

বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।