মোদীর পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ স্থান বাংলাদেশের
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ঢাকার সঙ্গে নতুন দিল্লির সৌহার্দ ও সহযোগিতা গভীরতর করাকে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম অভিষ্ট লক্ষ্য করা হয়। মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সফল জমি তৈরি করতে প্রথমে ঢাকায় এসেছিল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বাংলাদেশ-ভারত বহুমাত্রিক সম্পর্কের যে দু`টি প্রধান সমস্যার জট এখনো খোলা যায়নি, তার আশু সমাধানে মোদী সরকার তার রাজনৈতিক সদিচ্ছায় কোনো খামতি রাখবে না, সেই বার্তা নিয়েই ঢাকায় আসেন সুষমা স্বরাজ।
বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মোদী সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে যে নতুন হাওয়া বইছে, তাতে ভর করে সেদেশের পররাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগের এক মাসের মধ্যেই নতুন পররাষ্ট্রসচিব এস. জয়শঙ্কর ঢাকায় এসে বার্তা দিয়েছেন যে, ছিটমহল হস্তান্তর চুক্তি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে ভরত।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সবুজ সংকেতও নাকি পাওয়া গেছে এতে। বর্তমানে স্থলসীমা চুক্তিটি সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। খুব সম্ভবত ভারতের সংসদের চলতি অধিবেশনেই তা অনুমোদিত হবে, বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে এমনটাই।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মৈত্রী বাড়ানোর পথে তিনি কাঁটা হতে চান না।
যেহেতু স্থলসীমা চুক্তিতে ভারতীয় ভূখণ্ড হস্তান্তরের প্রশ্ন জড়িত, তাই সংবিধান অনুসারে সংসদের অনুমোদন দরকার। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার এই চুক্তিতে বেঁকে বসায় তা ঝুলে ছিল এতদিন।
ভারতীয় সংসদের নিম্নসভা লোকসভায় মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় শাসক দল বিজেপির সেটা নেই। তবে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ার পর এই সংক্রান্ত বিল পাশ এখন শুধু সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতি সম্প্রতি ঢাকায় এসে সে কথা বলেও গেছেন। তিস্তা চুক্তি ইস্যুতেও মমতার আগেকার অনড় অবস্থান অনেকটাই নরম হয়েছে। কিছু বাধ্যবাধকতা মাথায় রেখে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মূল আপত্তি থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন। তাই ভারতের কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনা প্রক্রিয়া এবার নতুন মোড় নেবে বলে মনে করছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তা-ব্যক্তিরা।
বিএ/আরআইপি