কবরেই আশ্রয় যাদের


প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

জীবনের কঠিন সংগ্রামে লিপ্ত তারা। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। কোনো ঘর-বাড়ি নেই তাদের। মানুষের মৃত্যুর পর শেষ আশ্রয় কবর হলেও গৃহহীন একদল মানুষ সেই কবরকে বেছে নিয়েছেন বসবাসের আশ্রয়স্থল হিসেবে। এ চিত্র দেখা গেছে ইরানের রাজধানী তেহরানের পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায়; কোনো আবাস না থাকায় যেখানে অন্তত ৫০ জন মানুষ কবরেই দিনাতিপাত করছেন।

ওই এলাকার কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গৃহহীন এসব মানুষের ছবি দেখে মর্মাহত হয়েছেন। আগামী বছরের মাঝের দিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন; এর আগে এসব ছবি দেখার পর দেশটির অর্থনৈতিক সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিলেন তিনি।

iran

তেহরানের ২০ কিলোমিটার পশ্চিমের শাহরিয়ার এলাকা থেকে ছবি তুলেছেন সাইদ গোলাম হোসেইনি। পরে এসব ছবি দেশটির দৈনিক শাহরবন্দ ডেইলিতে প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, শিশু, নারীসহ অন্তত ৫০ জন পুরুষ ওই কবরস্থানে বসবাস করেন। এদের মধ্যে অনেকেই মাদকাসক্ত।

চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ময়লায় জীর্ণ-শীর্ন এক ব্যক্তি কবর থেকে বেরিয়ে আসছেন; কবরের ভেতরে চারদিকে খড়ে আগুন দিয়েছেন। আগুনের তাপেই শীত নিবারণ করছেন তিনি। অন্যরাও পাশের কবরে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে বেকারত্বের হার উচ্চ। এ ছাড়া দেশটির মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে; দেশটির অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরছে এসব ছবি।

iran

অস্কার বিজয়ী ইরানের চলচ্চিত্র পরিচালক আসগর ফারহাদি এই ছবি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি। আসগর লিখেছেন, আজ আমি তেহরানের পাশের একটি কবরস্থানে বসবাসকারী নারী, পুরুষ, শিশুদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন পড়েছি। তারা এই শীতের মধ্যে কবরে থাকছেন। আমি লজ্জিত এবং এটি পড়ার পর আমার চোখে পানি চলে এসেছে।

আসগরের ওই চিঠির পর প্রেসিডেন্ট রুহানি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে কবরস্থানে বসবাসকারীদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছেন।

এসআইএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।