কাতারে নতুন শ্রম আইন নিয়ে অ্যামনেস্টির সতর্কতা


প্রকাশিত: ১০:৪১ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

কাতারের দীর্ঘদিনের বিতর্কিত শ্রম আইনে সংশোধনী আনা হলেও নিয়োগকর্তা ও কর্মীদের মধ্যে শোষণমূলক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে একটি মানবাধিকার সংস্থা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মঙ্গলবার বলেছে, নতুন আইন কাতারে এখনো অভিবাসী শ্রমিকদের জোরপূর্বক শ্রমের ঝুঁকি রয়ে গেছে।  

দেশটিতে আজ থেকে নতুন শ্রম আইন কার্যকর হয়েছে। কাতার বলছে, নতুন এই আইনের ফলে কাফালা স্পন্সরের পরিবর্তে শ্রমিকরা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন। দেশটিতে সব বিদেশি শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক তার কাফিল বা স্পন্সর। বেতন ভাতা ঠিক সময়ে না পেলে, কিংবা শোষণের শিকার হলে চাকরি ছাড়া কিংবা অন্যখানে ভাল চাকরির সুযোগ পেলেও কাফিল বদলানোরও সুযোগ নেই।

চাকরি ছাড়া কিংবা প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসলে আরোপ হয় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা। কাফালা বলে পরিচিত এই ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার পর অবশেষে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হয়েছে।

ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০২২ সালে দেশটিতে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে। বিশাল এ আয়োজন ঘিরে কাতারের নতুন পরিবহন অবকাঠামো, গৃহনির্মাণ ও ৬টি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলছে। দেশটিতে কাফালা পদ্ধতি চালু থাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত বিদেশি শ্রমিকরা চাইলেও চাকরি পরিবর্তন কিংবা দেশ ত্যাগ করতে পারতো না।

এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শ্রম আইন সংশোধনের ঘোষণা দেয় কাতার। মঙ্গলবার থেকে কাতারে সংশোধিত আইন কার্যকর হয়েছে। নতুন এ আইনে শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনে কোনো বিধি-নিষেধ না থাকলেও অভিবাসী শ্রমিকরা শ্রম শোষণের শিকার হতে পারেন বলে সতর্ক করে দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, শ্রমিকরা দেশে ফিরতে চাইলে কাফিলের অনুমতি কিংবা অনাপত্তির প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের বিরুদ্ধে যদি কোন আইনি অভিযোগ না থাকে, সে ইচ্ছা ও প্রয়োজন মতো নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সমস্যাবিষয়ক উপ-পরিচালক জেমস লিঞ্চ বলেছেন, নতুন আইনে স্পন্সরশিপ শব্দটি তুলে দেয়া হলেও একই ধরনের মৌলিক কিছু বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আনেনি। অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না। নিয়োগকর্তা অনুমতি না দিলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কমিটির কাছে এ বিষয়ে আবেদন করতে হবে।

এ ছাড়া নতুন আইনের অপব্যবহার হতে পারে বলেও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, এখন থেকে সকল বিদেশি শ্রমিককে চুক্তির মাধ্যমে কাজে নিয়োগ করা হবে। এর ফলে নিয়োগকারী ইচ্ছা অনুযায়ী শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবেন।

কোনো শ্রমিক যদি ছাঁটাই হয় এবং সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ না করে কিংবা যদি তার অভিযোগ আদালত আমলে না নেয়, সেক্ষেত্রে নতুন আইন অনুযায়ী ওই শ্রমিক পরবর্তী চার বছরের মধ্যে আর কাতারে কাজের অনুমতি পাবে না।

এসআইএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।