যেসব সুবিধা থাকছে কাতারের নতুন শ্রম আইনে


প্রকাশিত: ০৬:০২ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

কাতারে দীর্ঘদিনের বিতর্কিত শ্রম আইন সংশোধনের পর আজ থেকে দেশটিতে নতুন আইন কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে নতুন এই আইনে কাফালা স্পন্সরের পরিবর্তে শ্রমিকরা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন। মঙ্গলবার এ আইন কার্যকরে কাতার সরকারের ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে।

দেশটিতে সব বিদেশি শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক তার কাফিল বা স্পন্সর। বেতন ভাতা ঠিক সময়ে না পেলে, কিংবা শোষণের শিকার হলে চাকরি ছাড়ার উপায় নেই। কিংবা অন্যখানে ভাল চাকরির সুযোগ পেলেও কাফিল বদলানোর সুযোগ নেই।

চাকরি ছাড়া কিংবা প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসলে আরোপ হয় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা। কাফালা বলে পরিচিত এই ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার পর অবশেষে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হতে যাচ্ছে।

নতুন আইনে যা আছে
কাতারের শ্রম আইন সংস্কার করে, কাফালা পদ্ধতির পরিবর্তে এখন থেকে সকল নিয়োগ হবে চুক্তিভিত্তিক। সেই সঙ্গে আগে থেকে সেখানে থাকা শ্রমিকদের চুক্তিও নতুন পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হবে।

দেশে ফিরতে হলেও কাফিলের অনুমতি কিংবা অনাপত্তির প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের বিরুদ্ধে যদি কোন আইনি অভিযোগ না থাকে, সে ইচ্ছা ও প্রয়োজন মত নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে।

এছাড়া চাকরি পরিবর্তন করতে চাইলে, নতুন আইন অনুযায়ী এখন থেকে সেটি আর অসম্ভব নয়। বর্তমান কাফিলের সাথে চুক্তি শেষ হলে কিংবা এক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর কাজ পর একজন শ্রমিক চাইলে অন্যত্র কাজ করতে পারবেন। তবে, এক্ষেত্রে কাফিলের অনুমতির প্রয়োজন হবে।

নতুন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একজন শ্রমিককে বর্তমান নিয়োগকারীর অনুমতি ছাড়াই নিয়োগ দিতে পারবেন। কাতারের শ্রম অধিদফতরের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রমিক কাফিল বা স্পন্সর পরিবর্তন করতে পারবেন।

চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই বিদেশি শ্রমিকরা চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে, নিয়োগকারী এবং সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে তা করতে পারবেন একজন।

নতুন আইনের অপব্যবহার হতে পারে, এমন আশংকা করছে অনেক শ্রমিক সংগঠন। যেহেতু এখন থেকে সকল বিদেশি শ্রমিককে চুক্তিতে নিয়োগ করা হবে, ফলে নিয়োগকারীর খুশিমতো শ্রমিক ছাঁটাই হওয়ার আশংকা রয়েছে।

কোন শ্রমিক যদি ছাঁটাই হয়, এবং সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ না করে কিংবা যদি তার অভিযোগ আদালত আমলে না নেয়, সেক্ষেত্রে নতুন আইন অনুযায়ী ওই শ্রমিক পরবর্তী চার বছরের মধ্যে আর কাতারে কাজের অনুমতি পাবে না।

এছাড়া, আদালতে রায়ে যদি কোন শ্রমিককে দেশে পাঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া সেদেশে আর ঢুকতে পারবেন না ওই ব্যক্তি।

কাতার বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। সরকারি হিসেবে এই বছরও এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক লাখের মতো বাংলাদেশি গেছে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ কাতারে এখন প্রচুর অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, যাতে মূলত নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতের কয়েক লক্ষ শ্রমিক কাজ করছে।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।