মর্মান্তিক!


প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

রাজিনদারি দেবী। ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা। তার ডান চোখের নিচে কালো দাগ স্পষ্ট। সাদা শাড়ির বেশির ভাগ অংশেই রক্তের ছোপ ছোপ দাগ লেগে আছে। টাকা না দেয়ায় বেপরোয়া মারধরের পর রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপর তাকে ফেলে দিয়েছে ছেলে। সারা রাত রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায়ই পড়েছিলেন রাজিনদারি দেবী।

এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিম দিল্লির সাহদরার সুভাষ পার্ক এলাকায়। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে কেউ ওই বৃদ্ধাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। এমনকি, পুলিশি হেনস্থা থেকে বাঁচতে থানাতেও খবর দেয়নি কেউ। পরে এক মানবাধিকারকর্মীর তৎপরতায় উদ্ধার হন ওই বৃদ্ধা। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তার ছেলেকে।

সুভাষ পার্ক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন  রাজিনদারি দেবী। অনেক বছর আগে স্বামী মারা গেছে তার। একমাত্র ছেলে নন্দকিশোরকে অনেক যত্নে মানুষ করেন তিনি। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমে অবাধ্য হয়ে ওঠে ছেলে। টাকাপয়সার জন্য মারধর করতে শুরু করে তাকে।

ঘটনার দিন রাতে বাড়ি ফিরে টাকা চায় রজিনদারি দেবীর কাছে। দিতে রাজি না হলে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে। চলতে থাকে উদ্যম গালিও। মাথায় চোট পান তিনি। চোখের নিচে অনেক অংশ জুড়ে কালো দাগ পড়ে যায়। সারা রাত এ ভাবে রাস্তাতেই পড়ে ছিলেন রাজিনদারি দেবী। একটা কম্বল মুখে চেপে সারা রাত অঝোরে কেঁদেছেন।

শুক্রবার সকালে রাজিনদারির এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পান কুন্দন শ্রীবাস্তব নামে এক  মানবাধিকারকর্মী। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলেন। পুরো কথোপকথন ভিডিও করেছেন তিনি।

বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলার সময় ঘটনাস্থলে চলে আসে তার ছেলে নন্দ। রাস্তা ভর্তি লোকের সামনেই মাকে ধমকাতে শুরু করে সে। রাজিনদারি দেবীর পাশে বসেই তাকে মিথ্যাবাদী তকমা দিতে থাকে ছেলে নন্দ। হুমকি দেয় ওই মানবাধিকার কর্মীকেও।

রাজিনদারি দেবী বলেন, ‘প্রায় সময়ই আমাকে মারধর করে ছেলে। বাড়িভাড়ার টাকা আমি দিই। সে টাকার জন্যও রোজ আমাকে মারে।’

পুরো ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করার পর ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ বৃদ্ধার ওই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই বৃদ্ধা।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।