সিজারিয়ান পদ্ধতিতে শিশু জন্ম বিবর্তনে প্রভাব ফেলছে


প্রকাশিত: ০৫:৩৭ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬

বিজ্ঞানীরা বলছেন, শিশুর জন্মে নিয়মিত সিজারিয়ান পদ্ধতি বা অস্ত্রোপচারের ব্যবহার মানব বিবর্তনে প্রভাব ফেলছে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, অপ্রশস্ত পেলভিসের কারণে এখন সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে মায়েদের আগের চেয়ে বেশি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হচ্ছে।

গবেষকরা দেখছেন, গেল শতাব্দীর ষাটের দশকে গর্ভের প্রতি ১ হাজার শিশুর ৩০ শিশুর আকার যেখানে মায়ের যোনিপথের (বার্থ ক্যানাল) আকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতো, সেই সংখ্যা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজারে ৩৬।

ঐতিহাসিকভাবে মায়ের থেকে এই জিন সন্তানে আসার কথা নয়, যেহেতু এমন ক্ষেত্রে প্রসবের সময় তাদের দু’জনেরই মারা যাওয়ার কথা।

অস্ট্রিয়ার গবেষকরা বলছেন, অস্ত্রোপচার করে সন্তান জন্মদানের প্রবণতা হয়তো থেকে যাবে। তাই বলে স্বাভাবিকভাবে জন্মদান যে আর হবে না, তেমন নয়।    

ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনার তত্ত্বীয় জীববিদ্যা বিভাগের ড. ফিলিপ মিটেরোয়েকার বলছেন, মানব বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে।

তিনি বলছেন, জন্মের সময় সমস্যা সংক্রান্ত হার, যেটাকে আমরা ‘ফেটোপেলভিক ডিসপ্রোপোর্শন’ বলে থাকি, অর্থাৎ- যোনিপথের আকারের সঙ্গে শিশুর আকারের অসামঞ্জস্যতা, এই হার এত বেশি কেন?   

আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যতীত এই সমস্যা আগে প্রায়ই প্রাণঘাতী হতো।

যেসব নারীর পেলভিস খুবই সংকীর্ণ ১০০ বছর আগে সন্তান প্রসবের সময় তারা মারা যেতেন। তবে এখন তারা বেঁচে থাকেন। আর এমন মায়েদের থেকে একই জিন পায় তাদের মেয়েরা।    

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পেলভিস কেন প্রশস্ত হয়নি বহুদিনেও সে প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি।

স্তন্যপায়ী অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় মানুষের মাথার আকৃতি বড়। এর অর্থ দাঁড়ায়, শিম্পাঞ্জির মতো প্রাণীরা মানুষের চেয়ে সহজে জন্মদানে সক্ষম।

জন্ম সংক্রান্ত কিছু গবেষণা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার থেকে তথ্য নিয়ে গবেষকরা একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন।

ওই মডেল থেকে তারা যে পেয়েছেন তার একটি বিষয় হলো, নবজাতকের স্বাস্থ্যবান হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

তবে এই শিশুরা যদি বেশি স্বাস্থ্যবান হয়ে যায় প্রসবের সময় তা বড় সমস্যার  কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং তা মা ও শিশু উভয়ের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। আর এমনটা যদি হয় সেক্ষেত্রে মায়ের থেকে সন্তানের জিন পাওয়ার সুযোগ আর থাকে না।  

ড. মিটেরোয়েকারের মতে, সিজারিয়ান পদ্ধতি বা সন্তান জন্মদানে অস্ত্রোপচারের ব্যবহারের ফলে নবজাতকের আকার ছোট হওয়ার প্রবণতা কমে আসছে।

তিনি বলেন, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে এ কথা সত্য যে এটা বিবর্তনে প্রভাব ফেলছে।

নবজাতকের শরীরের আকার বড় হওয়া প্রবণতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলেই মনে করেন মিটেরোয়েকার।

এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।