সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করছে পশ্চিমা দেশগুলো


প্রকাশিত: ০৪:৪৯ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬

বিশ্বে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় সবচেয়ে ভাল ফলাফল করছে সিঙ্গাপুরের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসির।

স্কুলপর্যায়ে সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে তাদের বিজ্ঞান শিক্ষা এতটাই ভালো যে এখন পশ্চিমা দেশগুলোও তাদের অনুসরণ করছে।

সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে সম্প্রতি সেখানকার মন্টসফোর্ড মাধ্যমিক স্কুলকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিবিসি।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলটির বিজ্ঞানের শ্রেণীকক্ষটি দেখলে যতটা না স্কুলের ক্লাস মনে হবে, তার চেয়ে বেশি মনে হবে এটি বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাগার।

শিক্ষার্থীরা সেখানে নানা ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস বানাচ্ছে। এর মধ্যে ইলেক্ট্রিক কিবোর্ড থেকে শুরু করে বাগানে পানি দেয়ার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সবই আছে।

শিক্ষকরা এখানে শিক্ষার্থীদের আরো বেশি ব্যবহারিক শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করছেন। তারা স্কুলের একটি কক্ষের নাম দিয়েছেন প্রস্তুতকারকদের গবেষণাগার। শিশুরা এখানে যা তৈরি করবে তা বানানো শেষে চাইলে সেটা নিজেদের বাসায় নিয়ে যেতে পারবে।

রুপি টাম্পিলুন নামের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান যতটা সম্ভব অকৃত্রিম রাখতে এবং বাস্তব পৃথিবীর সঙ্গে পাঠদানের যোগসূত্র রাখার জন্যই এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আসল এবং বাস্তব জিনিস নিয়ে কাজ করলে তারা তাদের প্রতিদিনকার জীবনের সঙ্গে সেগুলো মেলাতে পারবে। এটা শুধু বিজ্ঞানে নয় সবক্ষেত্রেই তাদের শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই খুব ভালো। এক্ষেত্রে একটি বড় সুবিধা হলো দেশটি খুবই ছোট এবং এখানকার সকল শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

সিঙ্গাপুরে জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট বেশ প্রভাবশালী। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক টান উন সাং জানিয়েছেন, তারা শুধুমাত্র সেরা শিক্ষার্থীদেরই নিয়ে থাকেন। কারণ ক্লাসরুমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের একটি মজবুত ভীত গড়ে তোলা।

তার মতে, শিশুকে যদি সুশিক্ষিত করতে হয় তবে তাকে প্রথমেই ভাষার মৌলিক বিষয়গুলো শেখাতে হবে। সে বিভিন্ন বিষয় যেন বুঝতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য তাকে সেই বিষয়ের ব্যাকরণ শেখাতে হবে। এমনভাবে শেখাতে হবে যেন সে সেই ভাষাটি পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে।

সেখানকার মাত্র ১০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরাও খুব সাবলীলভাবে ইংরেজী বলতে পারে। শুধু তাই নয় বাচ্চারা বেশ মজা করেই অংক করে। অংক নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উৎসাহ এবং আগ্রহ সেটা খুবই প্রশংসনীয়। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতেও এখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সিঙ্গাপুর যে শিক্ষার ওপর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করছে বিশ্বব্যাপী তা ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।

উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও সিঙ্গাপুরের অভিভাবকরাও সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে খুবই সতর্ক। সন্তানদের শিক্ষার পেছনে সময় এবং অর্থ ব্যয়ে তারা যথেষ্ট আগ্রহী। এসব কারণই সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রাখছে। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের দেশের অর্থনীতিও দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।