শিঙ্গায় ফুৎকারের সময় সৃষ্টির অবস্থা


প্রকাশিত: ০৭:২০ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘটাতে আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত করে রেখেছেন। তিনি যেদিন আল্লাহর হুকুমে শিঙ্গায় ফুৎকার দিবেন, সেদিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় মানুষের অবস্থা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ; যা আল্লাহ তাআলা কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় শিঙ্গার মালিক (হজরত ইসরাফিল)-এর দৃষ্টি আরশের দিকে; যেদিন থেকে তাঁকে এ কাজের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে; সেদিন থেকে তিনি অনবরত আরশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এ ভয়ে যে, তাঁকে নির্দেশ করা হবে তাঁর দৃষ্টি নিক্ষেপের পূর্বেই। আর তাঁর চোখ দুটি যেন উজ্জ্বল দুটি তারকার মতো।’ (মুসতাদরেকে হাকিম)

আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকার দেয়ার জন্য নির্দেশ করবেন। আর সেই প্রথম ফুৎকারটি হবে সৃষ্টিকুলকে বেহুঁশ করার জন্য। প্রথম ফুৎকারের ফলে আকাশ এবং পৃথিবীতে যারা থাকবে, আল্লাহ ব্যতীত সব সৃষ্টিই বেহুঁশ হয়ে পড়বে অর্থাৎ সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হবে।

শিঙ্গায় ফুৎকার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ফলে আকাশ ও পৃথিবীতে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে যাদেরকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করতে ইচ্ছা করবেন তারা নয়।’(সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

কিয়ামতের দিন দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের মুহূর্তটিও হবে অত্যন্ত ভয়ংকর। সে সময় একজন অপরজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার জন্য হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিবেন। আর এটি হবে পুনরুত্থানের ফুৎকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, তখন ওরা (সব সৃষ্টি) দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা সে দিনের ভয়াবহতার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘অতএব আপনি তাদের থেকে মখু ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহ্বানকারী আহ্বান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে; তারা তখন অবনমিত চোখে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়। তারা আহ্বানকারীর দিকে দৌড়াতে থাকবে। অবিশ্বাসীরা (কাফেররা) বলবে, এটা কঠিন দিন।’ (সুরা কামার : আয়াত ৬-৮)

শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার পর মানুষ দলে দলে জমায়েত হতে থাকবে। তাদের সবাই ভয় ও চিন্তা মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করবেন, তারা ব্যতীত নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যারা আছে, তারা সবাই ভীতবিহবল হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর কাছে আসবে বিনিত অবস্থায়।’

পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামতের সময় উপস্থিত হওয়ার আগে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময়ের যাবতীয় ভয়াবহতা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।