মাদার তেরেসাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যে ভারতে সমালোচনার ঝড়


প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মাদার তেরেসা’র সেবার পেছনে আসল উদ্দেশ্য ছিল খ্রীষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করা – এই মন্তব্য করে ভারতে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন কট্টর হিন্দু সংগঠন আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগবত।

ভারতে সম্প্রতি ধর্মান্তরকরণ এবং ঘরওয়াপসি ইস্যুতে তুমুল বিতর্ক চলছে। তার মাঝেই মাদার তেরেসাকে নিয়ে এই মন্তব্য।

বিজেপি-র আদর্শগত অভিভাবক বলে যাদের ধরা হয়, সেই আরএসএস-এর শীর্ষ নেতা মোহন ভাগবত রাজস্থানে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা কি মাদার তেরেসা’র মতো সেবা করব? হ্যাঁ, তিনি হয়তো খুব মহৎ সেবা করে গেছেন – কিন্তু সেই সেবার পেছনে এই উদ্দেশ্যও থাকত যে সেবাপ্রাপ্ত মানুষটি কৃতজ্ঞতায় খ্রীষ্টান হয়ে যাবেন। এতে কিন্তু সেবার অবমূল্যায়ন হয়ে যায় – আমাদের সেবা হতে হবে নি:স্বার্থ!’

এই বক্তব্য সামনে আসার পরই কংগ্রেসসহ ভারতের সব বিরোধী দলই আরএসএসের নিন্দায় সরব হয়েছে। বামপন্থী, জনতা দল, তৃণমূল সবাই প্রায় এক সুরে বলছে যেভাবে ভারতে সম্প্রতি বিভিন্ন চার্চে হামলা চালানো হয়েছে – ঠিক সেই ধারাবহিকতাতেই খ্রীষ্টানদের ওপর এটা আর একটা আঘাত।

তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মাদার তেরেসা শুধু খ্রীষ্টানদের মা ছিলেন না, তিনি পুরো বিশ্বের জন্য রোল মডেল ছিলেন। আমি জানতে চাইব, যিনি নিজের স্যুট নিলামে চড়াচ্ছেন, তিনি এবার খাকি প্যান্ট-পরাদের কি বার্তা দেবেন?’

খাকি-প্যান্ট পরা বলে যাদের তিনি অভিহিত করছেন, সেই আরএসএস অবশ্য সঙ্ঘপ্রধানের মন্তব্যে অসুবিধার কিছু দেখছে না। সঙ্ঘের প্রবীণ নেতা এম জি বৈদ্য আজ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ভাগবত মোটেই ভুল কিছু বলেননি।

তিনি বলেছেন, ‘মাদার তেরেসা যত মিশনারি সেবার কাজ করেছেন তার পেছনে সবাইকে খ্রীষ্টান বানানোর লক্ষ্যই কাজ করত। পোপও তো ভারতে এসে বলেছিলেন পুরো এশিয়াকে তাঁরা খ্রীষ্টান বানাতে চান। তবে মিশনারিদের যেটা ভাল ব্যাপার, তারা তরবারি দিয়ে ধর্মান্তর করছেন না – সেবা আর শিক্ষার জোরে করছেন!’

মাদার তেরেসা’র সংগঠন মিশনারিজ অব চ্যারিটি আরএসএসের এই বক্তব্য নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হয়নি। তবে কলকাতায় মাদারের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও বহুদিনের সহকর্মী সুনিতা কুমার একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, মোহন ভাগবত কিছু না-জেনেই এমন একটা অভিযোগ করেছেন।

এসআরজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।