নিশ্চিত মৃত্যু থেকে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা


প্রকাশিত: ১১:২৭ এএম, ২২ নভেম্বর ২০১৬

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংড়ু থেকে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে থাকা মানেই নিশ্চিত মৃত্যু। এ কারণে তারা বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান। খবর বিবিসির।

বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালালেও বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় এসে আশ্রয় নিচ্ছেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা। রোববার রাতেও নৌকায় টেকনাফে এসেছেন কমপক্ষে ১৩ জন রোহিঙ্গা। এদের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি।

জানা গেছে, রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে রোববার রাতে একটি নৌকায় টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেন কমপক্ষে ২০ জন রোহিঙ্গা মুসলিম। কিন্তু নাফ নদীর মাঝপথে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। সে সময় অন্য একটি নৌকা এসে তাদের বাঁচালেও সাতজনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

প্রাণভয়ে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আসার সময় তিন সন্তানকে হারিয়েছেন হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া বেগম। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না যেভাবেই হোক বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান তারা। তিনি বলেন, সেখানে খারাপ ছিলাম না। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি সেখানে থাকার মতো অবস্থা আর নেই। সেখানে ফিরে যাওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু।

কবির আরো জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে আরো অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কয়েকটি নৌকায় তারা রওনাও দিয়েছিল। কিন্তু তাদের এখন কী অবস্থা তা তিনি জানেন না। মংডুতে তাদের গ্রামে আর কোনো রোহিঙ্গা মুসলিমকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। সবাই প্রাণভয়ে পালিয়ে আছেন কোথাও। নয়তো বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর মানুষ এসে ঘরের দরজা আটকিয়ে আগুন দেয়। কোনোভাবে যদি কেউ বাড়ি থেকে পালাতে চায় তাহলে তারা গুলি করে তাদের হত্যা করছে।

রাখাইনের মেয়েদের ওপর ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ করছেন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব সত্ত্বেও সীমান্তের ওপারে চরম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়া মানুষদের প্রতি বাংলাদেশিদের সহানুভূতি বাড়ছে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।

তবে বরাবরের মতই সব ধরনের সহিংসতার ঘটনা অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। সরকারের মুখপাত্র জ থে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, রাখাইনে যা ঘটছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।