কী করছেন শান্তির দূত আং সান সু চি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০০ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত কয়েকদিনের সহিংসতা ও সেনাবাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৩০ জনের  প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম সহিংসতার আশঙ্কায় ও সেনা অভিযানে দেশটি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের দিকে ছুটছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তেও নেয়া কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের তিনটি বিশেষ সামরিক ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, রাখাইন থেকে পালিয়ে নাফ নদী পাড়ি দেয়ার সময়ও নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের গুলি করে হত্যার অভিযোগ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। বুধবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে ১৩০ রোহিঙ্গা মুসলিমের প্রাণহানি ঘটেছে।

নাফ নদীর তীরে এসব রোহিঙ্গার লাশ ফেলছে মিয়ানমারের সেনাসদস্যরা। বাংলাদেশের দিকে ছুটলেও সীমান্তে এসে ঠাই পাচ্ছেন না রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের পুশ ব্যাক করছে মিয়ানমারের দিকে।

taslima

নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর এ নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, বাংলাদেশে মুসলমানরা হিন্দুদের মারছে। মিয়ানমারে বৌদ্ধরা মুসলমানদের মারছে। সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের মারছে। চারদিকে ঘৃণা আর ভায়োলেন্স। কী একটা দুঃসহ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা।

তিনি আরো লিখেছেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে রোহিঙ্গাদের কূকীর্তির কথা শুনি, রোহিঙ্গাদের ওপর বড় রাগ হয়। আবার রোহিঙ্গারা যখন অত্যাচারিত হয় মিয়ানমারে, তখন কষ্ট হয় ভীষণ। ২০১২ সালে ১৩০ জন রোহিঙ্গাকে মেরে ফেলা হয়েছে, দেড় লক্ষ রোহিঙ্গাকে উদ্বাস্তু করা হয়েছে। এবার তো মেরেছে ১৩০ জনকে, এবারও উদ্বাস্তু করেছে এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে। মুসলিম গ্রামের ৪০০ বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে পালাচ্ছে মিয়ানমার থেকে। নৌকোয় চড়ে যেদিকেই যাক, পাড় নেই নৌকা ভেড়াবার।

rohingya

নদীতে ভাসছে রোহিঙ্গাদের মরদেহ

এরপরেই রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে নীরবতা নিয়ে গত সাত মাস আগে নির্বাচিত দেশটির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন  তসলিমা নাসরিন।

তসলিমা লিখেছেন, কী করছেন `শান্তির দূত` আং সান সু চি? মিয়ানমার আর্মিদের বর্বরতার বিরুদ্ধে মোটেও তো মুখ খুলছেন না। আসলে গদিতে এতই আরাম যে তা ধরে রাখার জন্য শান্তির দূত হয়েও চড়ান্ত অশান্তি করতে দ্বিধা করেন না। মানবাধিকারের জন্য সারা জীবন লড়াই করেও অন্যের মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে এতটুকু লজ্জিত হন না।

এসআইএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।