সিরিয়ায় যাওয়া কিশোরীদের ফিরে আসার আহ্বান পরিবারের


প্রকাশিত: ০৬:২২ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়া তিন কিশোরীকে বাড়ি ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তাদের পরিবার। লন্ডনের ওই তিন স্কুলছাত্রী পরিবারকে না জানিয়ে তুরস্কে পাড়ি দেওয়ার পর সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তিন স্কুলছাত্রীর মধ্যে দুইজনই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমান্ডার রিচার্ড ওয়াল্টন বলেন, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিতেই ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী ওই তিন কিশোরী তুরস্কে পাড়ি জমিয়েছে। তারা যেকোনো সময় তুর্কি-সিরিয়া সীমান্ত পাড়ি দিতে পারে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ওই তিন তরুণীর মধ্যে শামীমা বেগম (১৫) ও খাদিজা সুলতানা (১৬) ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও কথা বলেন। ১৫ বছর বয়সী আরেক তরুণী ইংরেজির পাশাপাশি আফ্রিকার আমহারিক ভাষায় পারদর্শী।

পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় তাদের বসবাস বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। ওই তিন কিশোরীর জন্য তাদের অভিভাবকেরাও উদ্বিগ্ন। শামীমার পরিবার বলছে, তারা বুঝতে পারছে, যারা সমস্যায় রয়েছে তাদের সাহায্য করার জন্যই সে (শামীমা) এই পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু সিরিয়া একটি বিপজ্জনক স্থান। তার পরিবার এক বিবৃতিতে আরও জানান, আমরা তোমাকে ভয়ঙ্করভাবে তোমার অভাব অনুভব করছি। তোমার জন্যে আমরা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি। সিরিয়া একটি বিপজ্জনক স্থান। আমরা চাই না তুমি সেখানে যাও। পুলিশের সহায়তা নাও। তারা তোমাকে বাড়ি ফেরার জন্য সাহায্য করবে। খাদিজার পরিবার বলছে, তারা খুবই মর্মাহত।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে সিরিয়া ভ্রমণকারী গ্লাসগোর এক নারী ওই তিন কিশোরীর মধ্যে অন্ততপক্ষে এক কিশোরীর সঙ্গে স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলেন। ওই নারীর পরিবার জানিয়েছে, ওই কিশোরীদের রিক্রুটে তাদের মেয়ে সহায়তা করেছে ভেবে তারা খুবই আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।

আকশা মাহমুদ নামে ওই নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তুমি তোমার পরিবার ও স্কটল্যান্ডের মর্যাদা নষ্ট করেছ। তোমার এই ধরনের পদক্ষেপ এক ধরনের বিকার এবং ইসলামের বিকৃতি।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের তথাকথিত জিহাদিদের স্ত্রী হতে ৫০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ নারী তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। এই তিন স্কুলছাত্রীর ক্ষেত্রেও একই ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ওই তিন কিশোরীর অপর এক বান্ধবী সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিল।

লন্ডনের পুলিশ আশা করছে, মেয়েগুলো তাদের নিয়ে অভিভাবক ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারবে এবং পরিবারের কাছে ফিরে আসার মতো সাহসিকতা দেখাবে। ভারী তুষারপাতের কারণে তুরস্কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে মেয়েগুলো এখনো সিরিয়ায় পৌঁছাতে পারেনি বলে ধারণা করছে লন্ডনের পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সর্বশেষ ওই মেয়েগুলোকে দেখা গিয়েছিল। তারা কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছে বলে পরিবারকে জানিয়ে গেছে। কিন্তু ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে তুরস্কের একটি বিমানে চড়ার জন্য গেটউইচ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেস্টনি পাড়ি দেওয়ার সময় ওই তরুণীদের ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।

এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।