যে রাজ্যগু‌লো‌তে নির্ধারণ হবে হিলা‌রি-ট্রা‌ম্পের ভাগ্য


প্রকাশিত: ০৬:৪৮ পিএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৬

আমেরিকার ইলেকশন সিস্টেমটা কিছুটা ভিন্ন। এখানে মোট ভোট বেশি পেয়েও কেউ হারতে পারে। এরকম হয়েছিল আল গোর আর বুশের নির্বাচনের সময়। আল গোর বুশের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েও হেরেছিলেন।

এখানে ইলেক্ট্ররাল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। মোট ইলেক্ট্ররাল ভোট আছে ৫৩৮। এই ৫৩৮ এর মধ্যে যে ২৭০টা ইলেক্ট্ররাল ভোট পাবে সে জিতবে। এই ইলেক্ট্ররাল ভোট কিন্তু আবার সব স্টেটে সমান না। যেমন নিউইয়র্কে আছে ২৯টা, ক্যালিফোর্নিয়ায় আছে ৫৫টা, এরকম বাকি স্টেটগুলাতে বাকি ইলেক্ট্ররাল ভোটগুলা ভাগ করে দেয়া। এখন ধরেন হিলারি যদি নিউইয়র্কে জিতে যায় তাহলে হিলারির ঝুঁলিতে ২৯টা ভোট জমবে। এখন যদি ক্যালিফোর্নিয়ায় জিতে যায় তাহলে ২৯ এর সঙ্গে ৫৫টা ভোট যোগ হবে। এরকম হতে হতে যদি ২৭০ হয়ে যায় তাহলে সে জিতে যাবে।

আরো একটা মজার ব্যাপার হলো- আমেরিকার ইলেকশনের রেজাল্টের আগেই ম্যাক্সিমাম স্টেটেই বলে দেয়া যায় কে ইলেকশনে জিতবে। এক্সসেপ্ট ১০-১৫ স্টেট ছাড়া। যে স্টেটগুলারে বলা হয় সুয়িং স্টেট বা ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট। আর এই সুয়িং স্টেট বা ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটের ভোটের রেজাল্টেই কিন্তু ইলেকশনের ফাইনাল রেজাল্ট নির্ধারিত হয়। ডেমোক্রেট যে স্টেটগুলাতে মাস্ট জিতবে রেজাল্টের আগে বলে দেয়া যায় সেগুলোরে বলা হয় ব্লু স্টেট আর রিপাবলিকান যেগুলাতে জিতবে সেই স্টেটগুলারে বলা হয় রেড স্টেট। সুতারাং ৫০টা স্টেটের মধ্যে এই ১০-১৫টা স্টেটেই আসল খেলাটা হয়। যেমন এবার ধরা হয়েছে ১১টা স্টেটকে সুয়িং স্টেট বা ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট। সুতারাং এই ১১টা স্টেটেই হবে আসল খেলা। এগুলো হলো কলোরাডা, ফ্লোরিডা, আইওয়া, মিশিগান, নিউ হ্যাম্পশেয়ার, নর্থ ক্যারোলিনা, ওহাইও, নেভাদা, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া ও উইস্কেন্সিন।

এবার ব্লু আর রেড স্টেটের হিসেবে অলরেডি কে কয়টি ইলেক্ট্রাল ভোট পেতে যাচ্ছে সে হিসেবটা একটু দেখি। এখন পর্যন্ত ব্লু আর রেড স্টেটের হিসাবে ডেমোক্রেট ১৮২ কনফার্ম+ ৫০ অলমোস্ট কনফার্ম সুতরাং ২২৮ ইলেক্ট্ররাল ভোট হিলারির ঝুঁড়িতে আছে। অপরদিকে
রিপাবলিকান ১৫৪ কনফার্ম+ ১৯ অলমোস্ট কনফার্ম সুতরাং ১৭৩টা ইলেক্ট্ররাল ভোট ট্র্যাম্পের ঝুঁড়িতে আছে।

সুয়িং স্টেটের একটা হিসাব! ভার্জিনিয়া (১৩), উইস্কেন্সিন (১০) হিলারি জিতবে প্রায় নিশ্চিত। কলোরাডা (৯) হিলারি নিশ্চিত মনে হচ্ছিল কিন্তু আর্লি ভোটিংয়ের রেজাল্ট আসার পর দেখা গেছে ট্রাম্প এগিয়ে। সুতারাং যে কেউ জিততে পারে। ওহাইও (১৮), আইওয়া (৬), নেভাদা (৬) ট্রাম্প প্রায় নিশ্চিত জিতবে।

বাকি রইলো ফ্লোরিডা (২৯), পেনসিলভেনিয়া (২০), নর্থ ক্যারোলিনা (১৫), নিউ হ্যাম্পশেয়ার (৪), মিশিগান (১০)। যে স্টেটগুলা হলো এবার ভাইটাল সুয়িং ষ্টেট। এই পাঁচটা স্টেটের তিনটাতে হিলারিকে জিততে হবে মাস্ট। পেনসিলভেনিয়া আর মিশিগান মোটামটি শিউর যে হিলারি জিতে যাবে। আর থাকলো বাকি ১টা। সেই ১টা যদি ফ্লোরিডা হয় তাহলে ইলেকশন ইজ ওভার। সেই ১টা যদি নর্থ ক্যারোলিনা হয় তাহলে ইলেকশন ইজ অলমোস্ট ওভার। যদি হিলারি মিশিগানে হেরে যায় তাহলে কিন্তু নিউ হ্যাম্পশেয়ার মাস্ট জিততে হবে। সুতরাং পেনসিলভেনিয়া/মিশিগান অথবা নিউ হ্যাম্পশেয়ার/ফ্লোরিডা অথবা নর্থ ক্যারোলিনা জেতা লাগবে।

এই পাঁচটা স্টেটের চারটাতে ট্রাম্পকে জিততে হবে মাস্ট যদি প্রেসিডেন্ট ইলেকশন জিততে হয়। নর্থ ক্যারোলিনা ও ফ্লোরিডাতে ট্রাম্পের জেতার হালকা একটা চান্স আছে। মিশিগানেও সে চমক দেখাতে পারে। নর্থ ক্যারোলিনা/ফ্লোরিডা/মিশিগান/নিউ হ্যাম্পশেয়ার যদি জিতে যায় তাহলে ট্রাম্প হবে আমেরিকার নেক্সট প্রেসিডেন্ট! কোনোভাবে যদি ট্রাম্প ওহাইওতে হেরে যায় তাহলে এই পাঁচটার চারটাতে জিতেও কোনো লাভ হবে না।

সুতরাং ফ্লোরিডা, পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা ও ওহাইও হলো দুজনের জন্যেই ডু ওর ডাই স্টেট।

বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।