সীমান্ত উত্তাপের কাঁটা এক ভারতীয় ও এক পাকিস্তানি বন্ধুর সম্পর্কে
সীমান্ত উত্তাপের কাঁটা বিঁধছে এক ভারতীয় ও এক পাকিস্তানি তরুণীর বন্ধুর সম্পর্কে। বন্ধুর বিয়েতে আসার জন্য ভারতীয় ভিসার আবেদন করলেও তা মঞ্জুর হয়নি। কনের সাজের আগে ভারতীয় বন্ধুর চাওয়া সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু যেন বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন। কিন্তু ভিসার আবেদন খারিজ হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
এ জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পেশায় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক পূরবী থ্যাকার। টুইটারে দেয়া এক টুইটে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ট্যাগ করেছেন। ট্যুইটারে কোনো সমস্যায় পড়লে এর আগে বিভিন্ন সমস্যার কথা জেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সুষমা। কিন্তু এক্ষেত্রে সুষমার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
কিছু দিন আগেই পাকিস্তানি তরুণীদের উদ্দেশ্যে সুষমা বলেন, তোমরা আমারও মেয়ে। কিন্তু এ বার পূরবীর পাকিস্তানি বন্ধু সারাহর ভারতে আসার ভিসা না পাওয়ার কথা জেনেও নীরব রয়েছেন তিনি।
পূরবীর ট্যুইটের জবাবে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর লিখেছেন, সুষমা স্বরাজ কবে লাল ফিতার ফাঁস খুলবেন, সেই দিন গোনা হচ্ছে। যিনি ইতিমধ্যেই দুবার ভারতে এসেছেন, তিনি কখনই বিপজ্জনক হতে পারেন না। আপনার বিয়ের জন্য শুভেচ্ছা।
পূরবী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার আর সারাহ মুনিরের বন্ধুত্ব কতটা গভীর যারা জানেন, তারা বুঝতে পারবেন যে, ওর ভিসার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় আমরা কতটা ভেঙে পড়েছি’।
পূরবী জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে তার বিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতে আসার জন্য ভিসার আবেদন করেছিলেন সারাহ।
ভারতীয় এই তরুণী বলেন, জীবনের সবচেয়ে বড় দিনে আমার প্রিয় বন্ধু আসতে পারবে না, এটা মানতেই পারছি না। কাগজপত্রের জটিলতা, মাসের পর মাস অপেক্ষা, এত কিছু পেরিয়ে শেষমেশ ভিসা হল না! ভাবতেই পারিনি যে ও ভিসা পাবে না।
ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতপূর্ণ ইতিহাসের কথা স্বীকার করেও পূরবী চান, মানুষের মধ্যে সম্পর্কের মাঝে সীমান্তের কাঁটাতার যেন বিভেদের প্রাচীর না হয়ে ওঠে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দু’জন সীমান্তের দু’প্রান্তে জন্মেছি বলে বন্ধুত্বটা কঠিন হয়ে যায় না। আমাদের দুই দেশের ইতিহাসের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গভীর প্রভাব রয়েছে। আর তা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যোগাযোগের ওপরেও প্রভাব ফেলেছে। এ কথা তো কেউ ভাবে না’।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ঢুকে কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মােঝে চরম উত্তেজনা চলছে। সীমান্তে গোলাগুলিতে এখন পর্যন্ত দুই দেশের ৩০ জনেরও বেশি নাগরিক ও সেনা সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে।
সূত্র : এবিপি আনন্দ।
এসআইএস/এবিএস