ভারতীয় সেনারা বেশি কথা বলে না : মোদি


প্রকাশিত: ০৫:২২ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যুদ্ধের পক্ষে নন বলে আগেই জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তার সেই বক্তব্যে যে দেশের মাটিতে তৈরি হওয়া ক্ষোভ সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, সেটাও বুঝতে পারছেন হাড়ে হাড়ে। আর সেকারণেই নতুন করে ঘোষণা দিলেন, যুদ্ধ বিকল্প নয়। কিন্তু জঙ্গি দমনে সামরিক অভিযান হবেই।

গতকাল এক বক্তব্যে মোদি পাকিস্তানের জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, সামরিক যুদ্ধ নয় দু’দেশকে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করার জন্য লড়াই করতে হবে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের জনগণকে সে দেশের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলারও কৌশল নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু উরির ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক হুঙ্কার এবং তার দারিদ্র্যর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে কৌশল কিছুটা পাল্টালেন মোদি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে রোষ সামাল দিতে মাঝামাঝি পথ নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ না হলেও পাক জঙ্গি দমনে সামরিক অভিযান হচ্ছেই। এখন শুধু উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা। সেনাবাহিনীকে সব ধরনের নির্দেশ দেয়া আছে। তারাই ঠিক করবে, কখন কোথায় এই হামলা হবে।

বিজেপির পরিষদের বৈঠকে এই ঘোষণা করার আগে আজ আকাশবাণীর অনুষ্ঠানেও মোদি উরি প্রসঙ্গে বলেছেন, আমাদের সেনা বেশি কথা বলে না, বীরত্বেই জবাব দেয়। বিরোধীরা কিন্তু মনে করছেন, মোদী আসলে সেনাবাহিনীর ঘাড়ে বন্দুক রেখে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেস আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে মোদীর পাক-নীতি দিশাহীন। মোদীর এ দিনের ঘোষণার পরেও তারা একই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। কারণ, গত কালের মতো আজও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও রকম পদক্ষেপের কথা তিনি বলেননি। বলেছেন জঙ্গি দমনের কথা।

এসব আলোচনা সমালোচনা থেকে অবারিতভাবেই প্রশ্ন উঠছে কড়া জবাব কবে, কিভাবে এবং কোন পথে দেওয়া হবে? আসলে পাঠানকোটের পর উরির ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এখন নিজের সঙ্গেই নিরন্তর লড়তে হচ্ছে মোদিকে। বিরোধী নেতা মোদি এক সময় কথায় কথায় পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার কথা বলতেন। এখন প্রশ্ন উঠছে আজ তিনি শুধুমাত্র কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েই ক্ষান্ত কেন? মুখে হুঙ্কার দিয়েও বাস্তব পদক্ষেপ নিতে তিনি কেন পিছপা হচ্ছেন?

এদিকে, বিজেপির এক শীর্ষনেতার কথায়, আসলে সেনা কখন কোথায় কিভাবে জবাব দেবে, সেটি তো আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলার বিষয় নয়। কিন্তু ক্ষুব্ধ দেশবাসী সেটিই শুনতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে। সেই উত্তর না পাওয়াতেই ক্ষোভ জমছে। তাই প্রধানমন্ত্রী বারবার সেনাদের উপরে ভরসা রাখতে বলছেন। একই সঙ্গে দলের ভিতরে বাইরে এই রোষে কিভাবে রাশ টানা যায় সেটিও ভাবতে হচ্ছে মোদিকে।

মোদী বলেন, বোমা-বন্দুকের আওয়াজের মধ্যেও দেশভক্তি জাহির করার অন্য পন্থা আছে। এই সুযোগে কাশ্মিরের জনতার আস্থা অর্জনেরও চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, পাকিস্তানই তাদের একাংশকে বিভ্রান্ত করেছিল। মানুষ তা বুঝতে পেরেছেন বলেই উপত্যকায় শান্তি ফিরছে। এখন মূলস্রোতে ফিরতে হবে। আর নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। এ নিয়ে জনগণকে চিন্তা করার কিছু নেই। সরকারই সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।