সাহিত্য সম্মেলনের সঙ্গে চলছে বইমেলা


প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সোমবার মেলায় নতুন বই এসেছে ৩৫টি।

সাহিত্য সম্মেলনের প্রথম কর্ম অধিবেশনের শুরুতে সকাল ১০টায় ‘এই সময়ের সাহিত্য’ শীর্ষক সম্মেলনের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সৈয়দ শামসুল হক। ধারণাপত্রে তিনি বলেন, সাহিত্য সত্যকে ধারণ করে। মানবীয় অভিজ্ঞতায় জীবনকে ঋদ্ধ করার যে পন্থা সাহিত্য নির্দেশ করে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আমরা তার রূপরেখার সন্ধান পেতে পারি।

এরপর এই সময়ের কথাসাহিত্য শীর্ষক আজকের দিনব্যাপী অধিবেশনের প্রথম পর্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কথাসাহিত্যিক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, নবনীতা দেব সেন এবং বিহার থেকে আগত সাহিত্যিক দিলীপ সিনহা।  আলোচকরা বলেন, বাংলা এখন শুধু রাষ্ট্রীয় ভাষা নয়, আন্তর্জাতিক ভাষাও বটে। এই ভাষার কথাসাহিত্যিকরা যেমন শিল্পমান সম্পর্কে সচেতন তেমনি মানুষের অধিকারের কথা নতুনতর গদ্যরীতিতে পরিস্ফুট করছেন। তবে বাংলা ভাষা চর্চা নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কোন সুযোগ নেই। কারণ বিশ্বায়নের ঢালাও প্রভাবে ভাষাও আজ এক জটিল পরিস্থিতিতে উপনীত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কথাসাহিত্য-পরিসরে দলিত সাহিত্য, নারীস্বর ইত্যাদি প্রপঞ্চকে গুরুত্ব দিতে হবে।

সকাল ১১টায় দ্বিতীয় অধিবেশনে ‌‘Chronicles of our time the contemporary fiction Bangladesh’ শীর্ষক সমকালীন কথাসাহিত্য বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাশিল্পী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাহিত্যের লিখিত রীতির পাশাপাশি মৌখিক কথকতার রূপরীতিকে সা¤প্রতিক সাহিত্যে আমরা অঙ্গীকৃত দেখতে চাই। এর মধ্য দিয়ে সাহিত্যের সর্বব্যাপ্ত অবয়বের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পথ পাওয়া যেতে পারে।

দুপুর ১২টায় তৃতীয় অধিবেশনে ভারতের প্রখ্যাত বাঙালি কথাশিল্পী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে আলাপচারিতায় মিলিত হন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন। আলাপনে অংশ নিয়ে কথাসাহিত্যিবৃন্দ বলেন, সাহিত্যিককে সময়ের সাথে সাথে নিজেকে নবায়ন করে নিতে হয়। চারপাশের মুহুমূর্হু পরির্বতনকে আত্মস্থ করতে হয় এবং ইতিবাচক দৃষ্টিতে জীবনকে অবলোকন করতে হয়। জীবনরসের সন্ধান না পেলে সাহিত্য মানুষের সঙ্গে সংযোগহীন হতে শুরু করে তবে প্রকৃত লেখক লিখেন নিজেরই জন্য। নিজের মধ্য দিয়ে তিনি সমষ্টিপাঠককে এবং বৃহদার্থে এই চলমান সময়কে ধারণ করেন।

বিকেল ৩টায় চতুর্থ অধিবেশনের সূচনা হয় পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট কবি শ্রীজাতের কবিতাপাঠের মধ্য দিয়ে। ইংরেজি পর্বে কথাশিল্পী মনজু ইসলাম এবং কাজি আনিস আহমেদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মিলিত হন ড. নিয়াজ জামান। এই আলাপনে লেখকবৃন্দ বলেন, বাঙালি লেখকদের ইংরেজি কথাসাহিত্যে প্রান্তীয় মানুষের স্বর যেমন ওঠে আসে তেমনি নতুন এক সাহিত্যরীতিরও তারা জন্ম দিয়ে চলেন যার মধ্যে সময়-দেশ ও মানুষের মহাস্বরই প্রতিধ্বনিত হয়ে চলে। মনজু ইসলাম এবং কাজী আনিস আহমেদ তাঁদের উপন্যাসের নির্বাচিত অংশ পাঠ করে শোনান।

বিকেল ৪টায় পঞ্চম অধিবেশনে ছিল সাহিত্য থেকে পাঠ ও আলোচনা। এতে অংশ নেন  পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, আনিসুল হক, জাকির তালুকদার, ইমানুল হক। এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক উদয়নারায়ণ সিংহ।

এদিকে মেলা দ্বিতীয় দিনেও অনেক স্টলের কাজ শেষে হয়নি। পাঠকদের ভীড়ও ছিল তুলনামূলক ভাবে কম।

এএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।