পাকিস্তানের পর এবার তুরস্কের নিন্দা


প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামির নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় পাকিস্তানের পর এবার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির জাতীয় দৈনিক হুরিয়াত ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদনে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলছে, আমরা দুঃখের সঙ্গে জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, আমরা গুরুত্ব সহকারে আবারো বলছি, এই পদ্ধতির মাধ্যমে অতীতের ক্ষত সারানো যাবে না এবং আমরা আশা করি, এই ভুল চর্চা বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করবে না।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে জামায়াতের ৬৩ বছর বয়সী এ শীর্ষ অর্থ যোগানদাতার ফাঁসি দড়িতে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, মীর কাসেম আলীকে রাত ১০ টা ৩৫ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

হুরিয়াত ডেইলি নিউজ বলছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করেছেন। সে সময় বাংলাদেশের বিরোধীদলগুলো এই ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা করে বলে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে এই ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়েছে। তবে সরকার বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মান অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে অনেক বাংলাদেশিই এই ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর শত শত মানুষ রাজধানী ঢাকার রাস্তায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন।

এর আগে, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার পর এক বিবৃতিতে দিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, প্রশ্নবিদ্ধ বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির নেতা ও শীর্ষ অর্থ জোগানদাতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় পাকিস্তান ‘গভীরভাবে মনক্ষুণ্ণ’।

তবে জামায়াত নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তান এবং তুরস্কের নিন্দা এই প্রথম নয়। এর আগেও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর নিন্দা জানায় এ দুই দেশ। শুধু তাই নয়, নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় তুরস্ক।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে মিডিয়া টাইকুন মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মীর কাসেমকে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছরের মার্চে আপিল বিভাগেও সেই রায় বহাল থাকায় রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম। আপিল বিভাগ গত ২৮ আগস্ট রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে কাসেমের মামলার সব বিচারিক প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি ঘটে।

এসআইএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।