সেইন্ট উপাধি পাচ্ছেন মাদার তেরেসা


প্রকাশিত: ০৪:১২ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এখন থেকে ‘ঈশ্বরের দূত’ বা ‘সেইন্ট’ নামে পরিচিত হবেন ‘সবার মা’ নামে খ্যাত মাদার তেরেসা।কারণ আজ (রোববার) তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেইন্ট ঘোষণা দিচ্ছে ভ্যাটিকান সিটি।

মাদার তেরেসা ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান। মৃত্যুর আগপর্যন্ত কলকাতা শহরের বিভিন্ন বস্তিতে দরিদ্র, রোগাক্রান্ত ও মৃতপ্রায় মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন তিনি।

জানাগেছে কোনো ব্যক্তিকে সেইন্ট হতে গেলে তার আগে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরুতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেইন্ট হতে মৃত্যুর পর কয়েক শ’ বছর লেগে যায়। কিন্তু মাদার তেরেসার ক্ষেত্রে তা হয়নি। মৃত্যুর মাত্র ১৯ বছর পরই ভ্যাটিকান তাকে সেইন্ট করতে যাচ্ছে। মাদার তেরেসার মৃত্যু হয় ১৯৯৭ সালে।

ক্যাথলিক চার্চের রীতি অনুযায়ী, বিশপের কাছে ভক্তরা কোনো ব্যক্তিকে সেইন্ট করার আবেদন জানান। এরপর সেই ব্যক্তির অলৌকিক ক্ষমতা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হয়। ওই সময় তাকে ‘সারভেন্ট অফ গড’ আখ্যা দেওয়া হয়।
 
এরপর সমস্ত তথ্য প্রমাণ পোপের কাছে পাঠানো হয়। পোপ যদি মনে করেন, ওই ব্যক্তি সেইন্ট হতে পারবেন, তাহলে তিনি ওই ব্যক্তির পাপ মুক্তির কথা (বিয়েটিফিকেশন) ঘোষণা করেন। অর্থাৎ তিনি ঈশ্বরের কাছে স্বর্গে প্রবেশ করেছেন।
 
তারপর সেই ব্যক্তির দ্বিতীয় অলৌকিক ক্ষমতা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়েও ওই সমস্ত ধাপগুলো পেরুতে হয়।  সব কিছু ঠিকঠাক হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেইন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভ্যাটিকান।
 
সেইন্টের তালিকায় যিনি স্থান পান, তার নামে নামাঙ্কিত হয় চার্চ। এমনকি, সেইন্ট হয়ে গেলে সেই ব্যক্তির ছবির মাথায় থাকবে জ্যোতির্বলয়ও। আজ (রোববার) সেই সম্মান পেতে চলেছেন মাদার তেরেসা।

পোপ ফ্রান্সিস সেইন্ট হিসাবে গত ১৫ মার্চ তার নাম ঘোষণা করেন। ২০০৩ সালে সেইন্ট হওয়ার প্রক্রিয়ার একটি ধাপ ‘বিয়টিফিকেশন’ স্তরে প্রবেশ করে তার নাম। সে বছর পোপ দ্বিতীয় জন পল প্রথমবার মাদারের অলৌকিক ক্ষমতার কথা জানান।

বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরের মনিকা বেসরা নামের এক উপজাতি মহিলার দীর্ঘদিনের টিউমার সারাতে যখন সব চিকিৎসকই হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন তিনি তেরেসার কথা ভেবে পেটের ওপর একটা ত্রুদ্ধসের ছবি রেখে প্রার্থনা করতে করতে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনাটি ঘোষণা করেন পোপ ফ্রান্সিস, ২০১৫ সালে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাজিলের এক বাসিন্দা জানান, ২০০৮ সালে তার টিউমার সেরেছে মাদার তেরেসার জন্য। ব্রাজিলবাসী ওই রোগী অবশ্য কোনো দিন মাদার তেরেসাকে দেখেননি।

তবে ভ্যাটিকানে সংবাদমাধ্যমের একটি বড় অংশের বক্তব্য, মাদার তেরেসাকে এই সেইন্ট স্বীকৃতি দিয়ে গোটা প্রক্রিয়াকেই সহজ করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি নাকি এই স্বীকৃতির যোগ্য নন। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি পোপ। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

এমএমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।