বিশ্বের ভঙ্গুর দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ৩৬


প্রকাশিত: ০৫:৩১ এএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিশ্বের ভঙ্গুর দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৬। ২০১৬ সালে ১৭৮ টি দেশ নিয়ে ভঙ্গুর দেশের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ১২টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে ওয়াশিংটনভিত্তিক ফান্ড ফর পিস-এফএফপির ফ্রাজাইল স্টেটস ইনডেক্স ২০১৬ নামের একটি প্রতিবেদনে ভঙ্গুর দেশের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে।

১৭৮টি দেশ নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনটি গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করেছে এফএফপি। ১২ বছর ধরে ওয়াশিংটনভিত্তিক ম্যাগাজিন ফরেন পলিসির সঙ্গে যৌথভাবে এফএফপি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।

জনসংখ্যার চাপ, উদ্বাস্তু ও অভ্যন্তরীণভাবে গৃহহীন মানুষ, দেশের ভেতরে বিভিন্ন পক্ষের সংঘর্ষ ও ক্ষোভ, মেধাবীদের দেশ ত্যাগ, একই রাষ্ট্রের বিভিন্ন জাতি,ধর্ম ও অঞ্চলের মধ্যে উন্নয়ন বৈষম্য, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও দারিদ্র্যের হার, দুর্নীতি, গণতান্ত্রিক সক্ষমতা ও নির্বাচনপ্রক্রিয়া, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তি, মানবাধিকার সুরক্ষা, বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘাত, স্থানীয় ও জাতীয় নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং বিদেশি সহায়তা ও হস্তক্ষেপের বিষয় বিবেচনায় করে এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

তালিকায় সবচেয়ে টেকসই দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ফিনল্যান্ড। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে নরওয়ে ও নিউজিল্যান্ড। আর সবচেয়ে নড়বড়ে দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সোমালিয়াকে। দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধরত দক্ষিণ সুদান রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেন ও সিরিয়ার অবস্থান চতুর্থ ও পঞ্চম। পরের অবস্থানে রয়েছে চাদ ও কঙ্গো। এই আটটি দেশকে খুবই উচ্চমাত্রার সতর্কতার তালিকায় রাখা হয়েছে।

খারাপের দিক থেকে এর পরের অবস্থানের দেশগুলোকে উচ্চমাত্রার সতর্কতার তালিকায় রাখা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, হাইতি, ইরাক, গিনি, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, বুরুন্ডি ও জিম্বাবুয়ে।

এর পরের দেশগুলোকে রাখা হয়েছে সতর্ক তালিকায়। বাংলাদেশ এই তালিকায় রয়েছে। এতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ অবস্থানে রয়েছে গিনি বিসাউ, ইরিত্রিয়া, নাইজার, কেনিয়া, কোস্টারিকা, ক্যামেরুন, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, লিবিয়া, মিয়ানমার, লাইবেরিয়া, মোরিতানিয়া, মালি, উত্তর কোরিয়া, কঙ্গো রিপাবলিক, রুয়ান্ডা, নেপাল ও সিয়েরা লিওন।

গত ১২ বছরে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদকালে এ দেশের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল।

২০০৯ সালে বর্তমান সরকার প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একটু একটু করে স্থিতিশীলতা বাড়তে থাকে। তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় আবারও বেশ অবনতি হয়েছে দেশের। তবে তিন বছর ধরে এ দেশ তার ভঙ্গুর অবস্থা থেকে একটু একটু করে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ পাকিস্তান, নেপাল, আফগানিস্তান এবং মিয়ানমারের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে। সেক্ষেত্রে  শ্রীলঙ্কার অবস্থান বাংলাদেশের মতই। আবার ভারতের অবস্থা এসব দেশের তুলনায় বেশ ভালো রয়েছে। পাকিস্তানকে বিশ্বের ১৪তম ভঙ্গুর রাষ্ট্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। আফগানিস্তানকে নবম স্থানে রাখা হয়েছে। মিয়ানমারের অবস্থান ২৬।

এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ৪৩, ভারত ৭০, চীন ৮৬, সৌদি আরব ৯৭, যুক্তরাষ্ট্র ১৫৯, রাশিয়া ৬৫, ইসরায়েল ৬৯, তুরস্ক ৭৯, মালয়েশিয়া ১১৫, ব্রাজিল ১১৭ ও আর্জেন্টিনা ১৪০তম স্থানে রয়েছে।

বিভিন্ন সূচকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে রয়েছে। প্রতিবেদনে খুবই স্থিতিশীল দেশের তালিকায় জায়গা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।