ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেয়ার দাবি নীতিশ কুমারের


প্রকাশিত: ০৩:০৮ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৬

ভারতে বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে বিতর্কিত ফারাক্কা বাঁধকে পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের জেরে গঙ্গাতে যে বিপুল পরিমাণ পলি পড়ছে তার জন্য প্রতি বছর বিহারকে বন্যায় ভুগতে হচ্ছে এবং এর একটা স্থায়ী সমাধান হলো ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেওয়া।

ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশের নানা আপত্তি আছে বহুদিন ধরেই, কিন্তু ভারতের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও মুখ্যমন্ত্রীও এই প্রথম ফারাক্কা বাঁধ প্রত্যাহারের দাবি তুললেন। ৪১ বছর আগে গঙ্গার ওপর যখন ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়, তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জলপ্রবাহের একটা অংশকে হুগলী নদীতে চালিত করে কলকাতা বন্দরকে পুনরুজ্জীবিত করা।

সে উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল না হলেও ফারাক্কার জেরে গঙ্গার উজানে যে পলি পড়া শুরু হয়েছে, তার জেরে প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের একটা বিস্তীর্ণ অংশ। ফারাক্কা থেকে কোনও লাভ উজানের এই সব রাজ্য পাচ্ছে না, কিন্তু প্রায় নিয়ম করে ফি বছরই তাদের ভুগতে হচ্ছে ফারাক্কার জন্য।

এই পটভূমিতেই মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেন বিহারের তৃতীয় মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগেই তিনি বলেন, বিহারে বন্যার এই অবস্থা গঙ্গায় পলি জমার কারণেই। যবে থেকে ফারাক্কা বাঁধ নির্মিত হয়েছে, তখন থেকেই এই পলি জমার শুরু। আগে যে সব পলি নদীর প্রবাহে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ত, এখন ফারাক্কার কারণে সেটাই নদীর বুকে জমা হয়ে বন্যা ডেকে আনছে। আমি তাই গত দশ বছর ধরে বলে আসছি এই সিল্ট ম্যানেজমেন্ট না-করলে বিহার কিছুতেই বন্যা থেকে পরিত্রাণ পাবে না।

তিনি বলেন, আমরা কোনও পয়সা চাই না; কিন্তু চাই কেন্দ্রীয় সরকার বা তাদের সংস্থাগুলো এসে দেখুক কীভাবে এই পলি সরানো যায়। এর একটা রাস্তা হতে পারে ফারাক্কা বাঁধটাই হঠিয়ে দেওয়া আর আপনাদের কাছে বিকল্প কোনও প্রস্তাব থাকলে সেটাও অনুসরণ করে দেখা যেতে পারে।

নীতিশ কুমারের এই কথা থেকেই স্পষ্ট বিহারে প্রতি বছরের বন্যার জন্য তার সরকার প্রধানত ফারাক্কা ব্যারাজকেই দায়ী করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিহার সরকারের পক্ষ থেকে একটি চার্টও তুলে দেওয়া হয়েছে; যাতে ফারাক্কা তৈরি হওয়ার আগে ও পরে বিহারে গঙ্গানদীর গভীরতা বা নাব্যতা কতটা কমেছে সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।