পঞ্চগড়ে কনকনে শীত : সীমাহীন কষ্টে সাধারণ মানুষ
হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে শুরু হয়েছে ২য় দফায় শৈতপ্রবাহ। দিনভর শিরশির বাতাস আর কনকনে ঠাণ্ডায় দুর্ভোগে পড়েছেন দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষ। দুইদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। দিনে খুব বেশি কুয়াশা না থাকলেও রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। জেলায় কোনো আবহাওয়া অফিস না থাকায় তাপমাত্রার সঠিক পরিমাপ জানা যায়নি। তবে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে বর্তমানে জেলায় রাতে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠানামা করছে।
জানা গেছে, দুইদিন ধরে মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে জবু থুবু হয়ে পড়েছে জেলার মানুষ। জনজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। শীতে শিশুসহ বৃদ্ধরা শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে সর্দিকাশি, এজমা, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ভির দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা-ভ্যান চালক আর খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো। তাদের প্রতিদিনের আয় কমে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনপার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। ঠাণ্ডার কারণে তারা মাঠে কাজ করতে পারছেন না।
এদিকে জেলার দুই লাখ দু:স্থ মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে মাত্র ১১ হাজারের কিছু বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন বলছে বেসরকারিভাবেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের লাঠুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক রহিমুল ইসলাম বলেন, ক’দিন ভালোই ছিলাম। ভেবেছি শীত বুঝি চলেই গেলো। কিন্তু কাল থেকে আবারও খুব ঠাণ্ডা শুরু হয়েছে। শীতের কারণে শরীর ব্যাথা করে। কোন কাজ করতে পারি না।
পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের অন্য জেলার তুলনায় বরাবরই আমাদের এলাকায় বেশি শীত থাকে। পৌরসভা এলাকায় ১৬/১৭ টি বস্তি আছে। এসব বস্তির অধিকাংশ মানুষ রিকশা-ভ্যান চালক ও দিনমজুর। তাদের দৈনন্দিন আয় কমে গেছে। শীতের প্রকোপ থেকে দু:স্থদের বাঁচাতে শুধু শীতবস্ত্র নয়, আর্থিকভাবেও তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামছুল আজম বলেন, জেলায় ১১ হাজারের কিছু বেশি কম্বল, চাদর ও সোয়েটার বিতরণ করা হয়েছে। প্রায় একই পরিমাণ শীতবস্ত্র বেসরকারিভাবে বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
-এমএএস