সুচিত্রাহীন এক বছর
এক বছর পূর্ণ হল সুচিত্রা সেন নেই। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন তিনি। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনা জেলায় জন্ম হয় সর্বকালের সেরা এই বাঙালি অভিনেত্রীর। একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন লালন করার জন্য তিনি সময় পেয়েছিলেন ৮২ বছর। কী এক অভিমানে একটা দীর্ঘ সময় ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন তিনি। মৃত্যুও তার সেই আড়াল ভেদ করতে পারেনি। আড়াল থেকেই অপরিমেয় এক দূরত্বে হারিয়ে গেলেন সুচিত্রা সেন।
বাংলাদেশে জন্ম নেয়ার কারণে বাংলাদেশের মানুষের প্রতি সুচিত্রার যেমন ছিল আত্মিক ভালোবাসা, বাংলাদেশের মানুষও তেমনি হৃদয় দিয়ে ভালোবেসেছনে এই নন্দিত শিল্পীকে। সুচিত্রা সেনের আসল নাম রমা দাশগুপ্ত। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমারের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
সুচিত্রা সেন অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- সাড়ে চুয়াত্তর, অগ্নিপরীক্ষা, ওরা থাকে আঁধারে, গৃহ প্রবেশ, দেবদাস, সাত পাকে বাঁধা, শাপমোচন, সাগরিকা, মেঝো বউ, হারানো সুর, দীপ জেলে যাই, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, চাওয়া পাওয়া, আঁধি, উত্তর ফাল্গুনী, গৃহদাহ, কমললতা, আলো আমার আলো, হার মানা হার, দেবী চৌধুরানী ইত্যাদি। বাংলা ছবির এই অবিসংবাদিত জুটি এত বছর পরও সমান জনপ্রিয়।
১৯৬৩ সালে সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস জয় করেন। ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করে। ২০০৫ সালে তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল, কিন্তু সুচিত্রা সেন জনসমক্ষে আসতে চান না বলে এই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। ২০১২ সালে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণ দেয়া হয়। ১৯৫৫ সালের দেবদাস ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। দেবদাসই ছিল তার অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি।