তোপের মুখে অ্যাঙ্গেলা মেরকেল


প্রকাশিত: ১২:৫৫ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৬

জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তম শহর মিউনিখে বন্দুকধারীর হামলায় ৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় দেশীয় নাগরিকদের তোপের মুখে পড়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক ও চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। অভিবাসী প্রত্যাশীদের জন্য তার ‘দরজা উন্মুক্ত নীতি’র জন্যই তাকে দায়ী করছেন অনেকেই।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে মিউনিখের অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারে ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক আলি সনবলির বন্দুক হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। ইরানি বংশোদ্ভূত সনবলি গুলি ছোড়ার আগে বলেন, সাত বছর ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তিনি। পুলিশ হামলাকারীর এ দাবির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। হামলাকারী সনবলির পিতা একজন ট্যাক্সিচালক।

Munich

হামলার পর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের উন্মুক্ত অভিবাসন নীতি নিয়ে জার্মান নাগরিকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকেই চ্যান্সেলর মেরকেলের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে দেশটির নাগরিক স্টিভেক বলেন, ইউরোপে আরো একটি সন্ত্রাসী হামলা। অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের হাতে অনেক রক্ত রয়েছে। কনোর নামের একজন লিখেছেন, মিউনিখে গোলাগুলি অনেক আগেই ঘটার কথা ছিল, এটি আশ্চর্যজনক। গত বছরের সিদ্ধান্তের পর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এখনো খুশি?

সুসান টুট লিখেছেন, অ্যাঙ্গেলা মেরকেলকে কেউ দেখেছেন? তিনি কোথায় লুকিয়ে আছেন?

চলতি বছর স্থানীয় নির্বাচনে মেরকেলের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল দেশটির অভিবাসনবিরোধী দল অলটারনেটিভ ফার ডাচল্যান্ডের কাছে ব্যাপক ব্যবধানে হেরে যায়। আগামী বছর দেশটির জাতীয় নির্বাচনে মেরকেলের দল ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে উঠে আসছে।

Munich

হিলবুজ অ্যাকা কেভিন দুজান নামের আরেক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অফিস থেকে পদত্যাগ করতে অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের জন্য আর কী লাগবে? তিনি এ ঘটনার জন্য দায়ী। জার্মান জনগণকে জেগে ওঠা উচিত।’

জে ম্যানটিভারা টুইটে বলেছেন, ‘এ ঘটনার পর মেরকেলকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে। কারণ তিনি গোটা ইউরোপের জন্য বিপজ্জনক।’

গত সপ্তাহে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটিতে কুড়াল হামলার পর আরো ‘মারাত্মক’ হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করে দেন। এমনকি এই হামলা ইউরোপজুড়ে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। জার্মানির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জার্মানিতে ইসলামী চরমপন্থী হুমকির সঙ্গে মানুষ বসবাস করছে। তার দেশকে এ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Munich

গত সপ্তাহের ট্রেন হামলা নিয়ে বার্লিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দে ম্যাইজাইরে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের বাভারিয়ায় কুড়াল নিয়ে ট্রেনে হামলাকারীকে আফগান শরণার্থী বলা হলেও সে পাকিস্তানি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জার্মানিতে গত বছর অন্তত ১১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছেন। অনেকেই ইউরোপে শরণার্থী সংকট তৈরির জন্য জার্মানির এই চ্যান্সেলরকে দায়ী করেছেন।

জার্মানির মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ এক মন্ত্রী বলেন, ‘ইইউর আরো কয়েকটি দেশের ন্যায় জার্মানিও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের ক্ষেত্র হিসেবে লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, এ পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।’

শনিবার সকালের দিকে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সতর্কবাণী দিয়ে বলেছেন, দেশটিকে আরো ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। যদিও এটি বলা কঠিন, তারপরও এটি বলা আমার দায়িত্ব। তিনি বলেন, সেখানে আরো হামলা হবে, আরো নিষ্পাপ মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। এ ধরনের হামলা ও হুমকির সঙ্গে আমাদের অভ্যস্ত হওয়া যাবে না।

এসআইএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।