তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টায় নিহত ৪২


প্রকাশিত: ০৩:৩২ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৬

তুরস্কের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের চেষ্টার মধ্যে দেশটির রাজধানী আঙ্কারায় শুক্রবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদ্রিম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে এছাড়া এ ঘটনায় ১৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি সশস্ত্র বাহিনীকে সেনা অভ্যুত্থানকারীদের ব্যবহৃত বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।

এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক অভ্যুত্থানের পর এক বিবৃতিতে তুরস্কের ক্ষমতা দখলের দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনী।

বিবৃতি থেকে উদ্বৃত করে দেশটির টিভি চ্যানেলগুলোর খবরে বলা হয়েছে, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে। দেশটির গণমাধ্যমেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ অভ্যুত্থান হয় বলে এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে।

এদিকে অভ্যুত্থানের মুখেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান ইস্তানবুলে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পর দেখা গেছে সমর্থকরা তাকে ঘিরে রেখেছেন। টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে, সেনা অভ্যুত্থানের এই চেষ্টাকে রাষ্ট্রদ্রোহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এরআগে সেনাবাহিনীর একটি অংশ দাবি করে, বর্তমানে তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ একটি পিস কাউন্সিলের হাতে এবং সেখানে কারফিউ এবং মার্শাল ল জারি করা হয়েছে।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদ্রিম পরে বলেন, পরিস্থিতি মোটামুটি সরকারের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে রাজধানী আঙ্কারার আকাশ ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে তুরস্কের সেনাপ্রধান কোথায় আছেন সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

এরআগে ইস্তানবুলের রাস্তায় সেনা সদস্যদের কৌশলী অবস্থান দেখা গেছে এবং আঙ্কারায় খুব কম উচ্চতায় বিমান উড়তে দেখা গেছে। ইস্তানবুলের তাকসিম স্কয়ারের কাছে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গেছে।

আঙ্কারায় পার্লামেন্ট বিল্ডিংয়েও বিস্ফোরণেও খবর রয়েছে। মনে করা হচ্ছে এমপিরা কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন।

সিএনএন তুর্কি ব্রডকাস্টারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী এবং তাদের সরাসরি সম্প্রচারও বন্ধ করা হয়েছে।

সেনা অভুত্থানের এই চেষ্টার পেছনে কাদের, কতটা সমর্থন রয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের কয়েকজন আটক হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

তুরস্কের সেনাপ্রধান জেনারেল হুলুসি আকারিকেও আরো অনেকের সঙ্গে সেনা সদর দফতরে জিম্মি করা হয়েছে বলে খবর রয়েছে।

এনটিভি নামে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে ইলদ্রিম বলেছেন, সামরিক নির্দেশনা না মেনে সেনাবাহিনীর একটি অংশ বেআইনি কাজ করছে। সবার জানা দরকার, আমরা এমন কিছু বরদাশত করবো না যা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ইস্তানবুলে পুলিশ সদর দফতরের বাইরেও গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে এবং ইস্তানবুল এয়ারপোর্টের বাইরে ট্যাংক অবস্থান করছে।

ইউরোপিয় ইউনিয়নের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে, ক্ষমতাশালী কারো নেতৃত্বে এটি খুব সুপরিকল্পিত একটি অভ্যুত্থান, এমন নয় যে মাত্র কয়েকজন কর্নেল এখানে জড়িত।

এরআগে ১৯৯৩, ১৯৮০, ১৯৭১ ও ১৯৬০ সালেও তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের খবর রয়েছে।

বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।