যুক্তরাজ্যে হ্যাঁ-না ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই


প্রকাশিত: ০৩:৩৭ এএম, ২৪ জুন ২০১৬

যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকবে, না ছেড়ে যাবে সে প্রশ্ন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার যে ঐতিহাসিক গণভোট হয়ে গেছে দেশটিতে এখন তার ফলাফল পাওয়ার অপেক্ষা।

প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ইইউ ছাড়তে চাওয়া অংশ প্রত্যাশার চাইতে বেশি ভোট পাচ্ছে। ফলে ‘হ্যাঁ’ ‘না’-এর এই ভোটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কটা কী দাঁড়াবে তা জানতে অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হচ্ছে।

উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস রয়েছে ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে। অন্যদিকে স্টকল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ড এর বিপক্ষে। তবে লন্ডন এবং ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিপুল ভোট এখনো হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে।

সাধারণ নির্বাচনগুলোতে একটি নির্দিষ্ট এলাকার মোট ভোট হিসাবে নেয়া হলেও এই নির্বাচনে সে বিষয়টি মুখ্য নয়। এখানে সারাদেশের মোট ভোটের ভিত্তিতে পাওয়া যাবে ফল।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় (বিএসটি) ভোট শেষ হওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল, ভোটের রায় ব্রিটেনের ইউরোপে থেকে যাওয়া পক্ষের দিকেই যাবে। কিন্তু ফল আসতে শুরু করলে দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসে।

৩৮২টি স্থানীয় ভোটগণনা কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে। এ কেন্দ্রগুলো থেকে পূর্ণাঙ্গ ফল পাওয়ার পর জানা যাবে কী হচ্ছে ইংল্যান্ডের।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কার্টিসের মতে, ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে প্রত্যাশার চেয়ে ১০ শতাংশ কম ভোট এসেছে থেকে যাওয়ার পক্ষে। এছাড়া স্কটল্যান্ডে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট এখনো বেশি থাকলেও সেখানে যুক্তরাজ্যের বাকি অংশের চেয়ে ভোটার কম ছিল।

brexit

ওয়েলসের চারটি এলাকার প্রাপ্ত ভোটের ফলের ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে সেখানে না ভোটই এগিয়ে রয়েছে। তবে এখনো মিডল্যান্ডস, ইরোর্কশায়ারসহ বেশ কিছু এলাকার কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

এরআাগে বৃহস্পতিবারের ভোটে ভোটারদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়: যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকা উচিৎ, না কি ছেড়ে যাওয়া উচিৎ?   

ভোটের দিন ৫ হাজার মানুষের উপর চালানো একটি অনলাইন জরিপে দেখা যায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ইউরোপে থেকে যাওয়ার পক্ষই।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালের (বাংলাদেশ সময় বিকেল) মধ্যে ম্যানচেস্টার টাউন হল থেকে ফল ঘোষণা করা হবে।

যুক্তরাজ্য যদি ইইউ থেকে বেরিয়ে যায় তবে ২৮ দেশের এই জোট গঠিত হওয়ার পর এটিই হবে জোটের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা।

গণভোটের রায় যদি ইউরোপ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে যায় তবে তা প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলবে। গতবছর সাধারণ নির্বাচনের আগে এই গণভোটের ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্যামেরন। প্রথমদিকে তিনি ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে থাকলেও পরে থেকে যাওয়ার পক্ষে চলে আসেন।

লেবার এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টিসহ ব্রিটেনের প্রায় সবকটি বিরোধী দলই ইউরোপে থেকে যাওয়ার পক্ষে।

মূলত অভিবাসন এবং অর্থনীতি, এ দুটি বিষয় সামনে রেখে এ গণভোটের জন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। যারা ব্রিটেনের ইউরোপে থেকে যাওয়ার পক্ষে রয়েছেন তাদের বক্তব্য হলো- ব্রিটেন যদি ইউরোপ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় তবে দেশটির অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে; যা একযুগেও কাটিয়ে ওঠা মুশকিল।

অন্যদিকে, যারা ইউরোপ ছাড়তে চান, তাদের বক্তব্য হলো- অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ইংল্যান্ড নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ছে।

এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।