থালায় বন্দি জীবন যাদের
১১ বছর বয়সী আল-আমিন ও তার বন্ধুরা দিনে ১০ ঘণ্টা কাজ করে, সপ্তাহে ছয়দিন। অ্যালুমিনিয়ামের শিট কেটে প্লেট ও বাটি তৈরি করে তারা।
রাজধানী ঢাকার বস্তিতে থাকা পরিবারকে সহায়তা ও খাবারের ব্যবস্থা করতে দিনে মাত্র কয়েকশ টাকা প্রয়োজন হয় তাদের। আল-আমিন ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দৈনিক জাকার্তা পোস্টকে বলে, ‘আমি স্কুলে পড়াশোনা করতে ভালোবাসি’।
পুরো শরীর অ্যালুমিনিয়ামের ময়লায় আচ্ছাদিত আল-আমিন রাজধানীর অদূরে কামরাঙ্গীরচরের কারখানায় কোনো ধরনের ময়লানিরোধী মুখোশ ছাড়াই কাজ করছে। সে বলে, ‘বাবা মারা গেছেন এবং আমার কোনো উপায় ছিল না, আমাকে অবশ্যই কাজ করতে হবে।’
এটি আল-আমিনের একার গল্প নয়। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, দেশের শিশু শ্রমিকের বৈধ বয়সের (১৪) নিচে অন্তত ৪৭ লাখ শিশুর শ্রমিক হিসেবে দিন কাটছে রেস্তারাঁয়, বাসের হেলপার, নির্মাণ বা গার্মেন্টস কারখানায় এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পে।
এদের মধ্যে অনেকেই পরিবারকে সহায়তার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন কারখানায় কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকেই অসুস্থ্ মা-বাবার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার জন্য কাজ করছে। এছাড়া গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঢাকার বস্তিতে আশ্রয় পাওয়ার জন্য অনেকেরই একটি চাকরি দরকার।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী অন্তত ১৬৮ মিলিয়ন শিশু কয়েক ডজন দেশে কাজ করছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা আরো বলছে, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালে অনানুষ্ঠানিক কিছু খাতে এসব শিশুর অনেকেই বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ও পণ্য উৎপাদন করছে, যেগুলো বিশ্ববাজারেও বিক্রি হচ্ছে।
‘কার্যকরী এবং সুনিয়ন্ত্রিত বাজার অথবা যে কোনো ধরনের পণ্য উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় শিশুশ্রমের স্থান নেই’- আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গাই রাইডার রোববার ‘বিশ্ব শিশুশ্রমবিরোধী দিবসে’ এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
এসআইএস/এমএস