পতিতাপল্লীর প্রাচীরবন্দী জীবন


প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ১৪ জুন ২০১৬

বিশ্বের যে অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে পতিতাবৃত্তি বৈধ রয়েছে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম এই পতিতাপল্লীর অবস্থান টাঙ্গাইল জেলার কান্দাপাড়ায়; দুইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি চলে আসছে।

২০১৪ সালে এ পতিতাপল্লী উচ্ছেদ করা হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) সহায়তায় পুনরায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অনেক নারীর জন্মও সেখানে, বেড়ে ওঠাও সেখানে এবং এটি উচ্ছেদ করা হলে তারা কোথায় যাবেন তাও জানেন না।

brothels

পতিতাপল্লীর সমর্থকরা মনে করেন, যৌনকর্মও একটি পেশা এবং এখানকার নারীরা এই পেশা ছেড়ে অন্য কিছু করতে চান না। এখানকার নারীরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন।

brothels

২০১৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সংস্থা পতিতাপল্লী উচ্ছেদ অবৈধ উল্লেখ করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালতে রিট করেন। পরে আদালত পতিতাপল্লী উচ্ছেদ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। শিগরিরই কান্দাপাড়ায় ফিরে যান উচ্ছেদ হওয়া নারীরা।

brothels

বর্তমানে পতিতাপল্লী এলাকায় প্রাচীরের বেষ্টনী দেয়া হয়েছে। সেখানে সরু গলিতে রয়েছে খাবারের দোকান, চা দোকান, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা। পতিতাপল্লী এখনো নিজস্ব নিয়মে পরিচালিত হয়ে আসছে। যেখানে উত্তরাধিকার সূত্রে নেতৃত্বের চর্চা হয়; যা মূল ধারার সমাজ ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। যেমন- পতিতাপল্লীর ভেতরে দুর্বল নারীরাও ক্ষমতাশালী।

brothels

তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে যখন একজন তরুণী এতে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিশেষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই বিশেষ তরুণীদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর। এই নারীরা আসে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে, অনেক সময় এরা পাচারের শিকার হয়ে এখানে এসে পৌঁছায়। তারা একজন আপার অধীনে থাকেন, যাকে কিনে নেন তিনি; তারা এই আপার অনুমতি ছাড়া বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি কোনো অর্থও পান না।

brothels

এই অর্থ পরিশোধ করতে এক থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজন হয়, তারা ‘স্বাধীন যৌনকর্মী’ হন। তারপর থেকে খদ্দের পছন্দ ও অর্থ নিজেই নিতে পারেন।

brothels

তবে পতিতাপল্লীতে বিক্রি হওয়া থেকে অর্থ পরিশোধের পর তিনি ইচ্ছা করলে এখান থেকে চলে যেতে পারেন। কিন্তু সমাজের চোখে কলঙ্কিত এই নারীরা নিজ বাড়ি ফিরে যেতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত সেখানেই থেকে যান তারা। অর্থ উপার্জন করে পরিবারের ভরণ-পোষণ চালান।

সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।

এসআইএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।