৬ দিনে ২৩ জনের ধর্ষণের শিকার নারী, বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ মোদীর

ভারতের উত্তর প্রদেশের এক তরুণী ৬ দিনে ২৩ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর দাবি, বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পর সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি প্রথমবার ধর্ষণের শিকার হন। এরপরের ৬ দিনে বিভিন্ন হোটেল ও বাসায় নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনা ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এমনকি, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঘটনাটি জানতে পারার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনে নিজের সংসদীয় এলাকা বারাণসীতে যান নরেন্দ্র মোদী। সেখানকার পুলিশ কমিশনারসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তিনি সংঘবদ্ধ এই ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন ও কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ১৯ বছর বয়সী ওই নারীর পরিবার থেকে প্রথমে নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর ধর্ষণ মামলা হয়। তাতে এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। বিভিন্ন সময় এসব ধর্ষণের আগে জোর করে মদপান করানো হয় তাকে। তবে ওই নারী এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কিছুই বলেননি।
ওই নারীর পরিবার থেকে মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ মার্চ তিনি বন্ধুর বাড়িতে যান। ফেরার সময় রাজ নামের একজনের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ তাকে লাঙ্কা নামক এলাকার একটি ক্যাফেতে নিয়ে যান ও অন্য বন্ধুদের নিয়ে বাজে আচরণ করতে থাকেন। পরদিন ৩০ মার্চ সামীর নামের আরেকজনের সঙ্গে দেখা হয় ওই নারীর। ওই সময় সামীর কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে ছিলেন। পরে সামীর ও তার বন্ধুরা ওই নারীকে মোটরসাইকেলে করে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, ধর্ষণের পর ওই নারীকে নাদেসার নামক এলাকায় ফেলে রেখে যান সামীর। এরপর ৩১ মার্চ আয়ুশ ও আরও কয়েকজন বন্ধু মিলে ওই নারীকে আরেকটি ক্যাফেতে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মদপান করানোর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ১ এপ্রিল সাজিদ নামের একজন তাকে একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে অনেকে মিলে ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার পর বাইরে ফেলে যায়।
সেখান থেকে ফেরার পথে ইমরান নামের আরেকজনের সঙ্গে দেখা হয় ওই নারীর। তিনিও তাকে আরেকটি হোটেলে নিয়ে যান ও জোর করে মদপান করান। পরে ইমরানও তাকে ধর্ষণ করে পরে বাইরে ফেলে রেখে যান।
২ এপ্রিল তাকে উদ্ধার করে নিজের বাসায় নিয়ে যান রাজ খান নামের আরেকজন। তিনিও ওই নারীকে ধর্ষণ করে একটি ঘাটে ফেলে রেখে যান। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে বন্ধুর বাসায় নিয়ে যান দানীশ নামের আরেক ব্যক্তি। সেখানে দানিশ ও কয়েকজন মিলে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগীর বাবা জানিয়েছেন, ২৯ মার্চ তার মেয়ে এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও সে ফেরেনি।
তিনি বলেন, আমরা ভয়ে কারও কাছে কিছু বলিনি। প্রথমে নিজেরাই মেয়েকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, কিন্তু সফল হইনি। পরে ৩ এপ্রিল আমরা পুলিশের কাছে যাই। ৪ এপ্রিল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সেসময় আমার মেয়ে খুবই খারাপ অবস্থায় ছিল। চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলে সে পুরো ঘটনা খুলে বলে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এসএএইচ