ভারতীয় ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ী নেতার নাম

পশ্চিমবঙ্গে ভুয়া ভোটার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এরপরেই পুরো রাজ্যে ভুয়া ভোটার সন্ধানে অভিযানে নামে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতা-কর্মীরা। তারপরেই সামনে আসে ভারতের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি ভুয়া ভোটারের নাম।
ভারতের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশের এক প্রভাবশালী স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নেতার। এছাড়াও ভুঁয়া নথি দিয়ে তিনি তৈরি করে ফেলেছেন ভারতীয় পাসপোর্ট এবং আঁধার কার্ড।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট এবং অন্যান্য নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশের খুলনা সদরের ৪৭, কে.ডি.এ ঘোষ রোডের বাসিন্দা ওই প্রভাবশালী স্বর্ণ ব্যবসায়ী অজয় কুমার বকসী। তার ৫৮ বছর বয়স, পিতা অধীর কুমার বকসী।
অজয় কুমার বকসী ২০২৩-২০২৫ সালে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) খুলনা জেলা শাখা দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বর্তমানে বাগেরহাট জুয়েলার্সের মালিক অজয়। বাজুসের খুলনা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন তিনি।
জানা গেছে, বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও তিনি নিয়মিতভাবে ভারতে যাতায়াত করতেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজারহাট-নিউ টাউন বিধানসভার অন্তর্গত রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকায় তার সম্পত্তি রয়েছে। যদিও তার ভারতীয় আধার কার্ডে ঠিকানায় রয়েছে বনগাঁ থানার অন্তর্গত মতিগঞ্জে নেতাজী মার্কেট। সেথানেও তার জমি কেনা আছে।
এমন পরিস্থিতিতে ভাইয়ের এসব সম্পত্তির বিষয়টি সামনে আনেন তার আপন ভাই সঞ্জয় বকসী। সব তথ্য প্রমানসহ পুরো ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়।
সঞ্জয় বকসীর অভিযোগ, ভাইয়ের জমিতে থাকেন বলে নানাভাবে তার পরিবারের ওপর মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে। অজয়ের নির্দেশে প্রতিবেশী সুব্রত মজুমদার তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এই অভিযোগে অজয় এবং সুব্রতর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন অজয়ের ভাই সঞ্জয় সেকসী।
সঞ্জয় বলেন, আমি একটা অভিযোগ করেছিলাম যে একজন বাংলাদেশি লোক এখানে মাঝে মাঝে আসে আমাদের ওপর অত্যাচারও করে। তিনি আরও বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন নেতা। আমি ন্যায্য বিচার চাই।
এই খবর সামনে আসায় রাজ্যের রাজনীতি সরগম হয়ে উঠেছে। শাসক ও বিরোধী দল উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের নেতা তথা বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, এই ভোটগুলো বিজেপি তৈরি করে রেখেছে।
তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে তালিকা তৈরি করে জেলাপ্রশাসক (ডিএম), মহকুমার প্রশাসক(এসডিও) এবং ব্লগ ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও)-কে পাঠিয়ে দিয়েছি। এই ভুয়া ভোটারদের ধরার কারণে বিজেপির মাথাব্যথা শুরু হয়েছে। এই ভোট গুলো বিজেপি তৈরি করে রেখেছিল।
এ বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মন্ডল বলেন, বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ আছেন যারা ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের জমি কিনে রেখেছেন। তাদের ওপারে ভোটার তালিকাতেও নাম আছে আবার এপারেও ভোটার তালিকায় নাম আছে। এরাই হলো এখানকার তৃণমূলের ভোট ব্যাংক। আমি পুলিশকে বলব তারা যেন যথাযথ তদন্ত করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়।
ডিডি/টিটিএন