চালু হওয়ার দুই বছর পর কোম্পানি পর্যায়ে গ্যাস কেনাবেচায় মিটারিং পদ্ধতির অনুমোদন দিলো জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। গ্যাস কেনাবেচায় আনুপাতিক হারে (প্রো-রাটা) বিল করার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ ও বিপণনের সব পর্যায়ে মিটারিং ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হবে। ফলে অপচয় ও চুরি কমে আসবে এবং কোম্পানিভেদে সিস্টেম লসের প্রকৃত চিত্র জানা সম্ভব হবে।
Advertisement
সোমবার (৬ জানুয়ারি) জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের উপ-সচিব মো. শেখ শহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মিটারিং পদ্ধতিকে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের সব স্তরে শতভাগ মিটারিং ব্যবস্থা কার্যকরের নিমিত্তে পেট্রোবাংলা গৃহীত গ্যাসের উৎপাদন থেকে শুরু করে গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার সরবরাহ চেইনের সব পর্যায়ে প্রকৃত মিটারিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের কার্যক্রমটি ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ভূতাপেক্ষভাবে অনুমোদন দেওয়া হলো। মিটারিং ব্যবস্থা কার্যক্রমের সঙ্গে একাধিক স্টেকহোল্ডার জড়িত থাকায় মিটারিং ব্যবস্থার পরিবীক্ষণ, ক্যালিব্রেশন, রিডিং গ্রহণ ইত্যাদি সংক্রান্ত কার্যক্রম পেট্রোবাংলা সমন্বয় করবে।
আরও পড়ুন বণ্টন পলিসিতে মার খাচ্ছে এলপি গ্যাস লিমিটেড প্রতিটি শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে হবেকোম্পানিগুলোর সিস্টেম লস কমানোর নির্দেশনা দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, অবৈধ সংযোগ, লিকেজ ও গ্যাস চুরি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে যে পরিমাণ সিস্টেম লস হয়, তা চিহ্নিত করে এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে সিস্টেম লস হ্রাসে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন, তাদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া সিস্টেম লসের প্রকৃত পরিমাণ পরিমাপ করে কোম্পানিগুলো সার্ভিস এলাকাকে বিভিন্ন জোনে বিভক্তপূর্বক মাসভিত্তিক সিস্টেম লস কমানোর পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কোম্পানিগুলো তা বাস্তবায়ন করে মাসভিত্তিক প্রতিবেদন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে জ্বালানি বিভাগে প্রেরণ করবে।
Advertisement
পাশাপাশি মিটারিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় জিটিসিএলের আর্থিক লোকসান থেকে উত্তরণের জন্য চিঠিতে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো-
১.গ্যাস সঞ্চালনে মুচাই কম্প্রেসর স্টেশন চালু রাখা অপরিহার্য। তবে মুচাই গ্যাস কম্প্রেসর স্টেশনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের বিল কে বহন করবে এবং পূর্বতন বিল কীরূপে সমন্বয় হবে এ বিষয়ে বিইআরসির সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত জিটিসিএল কর্তৃক পেট্রোবাংলাকে উক্ত জ্বালানির বিল পরিশোধ স্থগিত রাখা যেতে পারে। ২.পেট্রোবাংলার অর্থ পরিদপ্তরের আওতাধীন ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন (এফএমডি), পিএসসি পরিদপ্তর ও অপারেশন পরিদপ্তর এবং অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে সভা করে অনতিবিলম্বে ২০০৪ সালে নির্ধারিত জিটিসিএল এর কনডেনসেট সঞ্চালন চার্জ পুন:নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৩. যে সমস্ত উচ্চচাপ বিশিষ্ট সঞ্চালন পাইপলাইন জিটিসিএল এর মালিকানায় নির্মাণ করা হয়নি সে সকল পাইপলাইনের অপারেশনাল কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জিটিসিএল এর নিকট দ্রুত হস্তান্তরপূর্বক ট্রান্সমিশন চার্জ ভাগাভাগি করা যেতে পারে।
৪. অফ-ট্রান্সমিশন মিটারিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে জিটিসিএল এর যে পরিমাণ কারিগরি/সিস্টেম লস হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে হতে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে উক্ত কারিগরি/সিস্টেম লস অনুমোদনের জন্য বিইআরসির নিকট জিটিসিএল আবেদন করতে পারে। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে।
Advertisement
এনএস/এএমএ/এএসএম