সামরিক, জ্বালানি, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক। এ বিষয়গুলো নিয়ে শিগগির দুদেশের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাটের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তুরস্কের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তুরস্কের একটা বড় টিম আজ এসেছিল। তারা অর্থনৈতিক সহযোগিতার যে জায়গাগুলো যেমন খাদ্য থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, শিল্পকারখানা, ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, গার্মেন্টস শিল্পকারখানা, রপ্তানি, বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে আমরা ব্যাপক আলোচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন আছে। তাদের সঙ্গে একটা বৈঠক এ বছরই হওয়ার বিষয়ে সময় নির্ধারণ করা আছে। মিটিংটা আমরা অতিদ্রুত করতে চাই। আজকের মিটিং যে আলোচনা হয়েছে সেখানে অর্থনৈতিক সহযোগিতাগুলোকে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারি সেই ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমাদের আলোচনা হয়েছে।’
Advertisement
জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের মিটিংটা কবে নাগাদ হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশের সুবিধামতো দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার চেষ্টা করছি। সেখানে আমরা খাদ্য থেকে শিল্প, স্বাস্থ্য, শিল্পকারখানা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব জিনিস প্রয়োজন যদি আমাদের বিশেষায়িত ইকনোমিক জোন তৈরি করতে হয়, যদিও আমাদের বেশ কিছু ইকোনমিক জোন ইন ফাংশনে আছে, সেগুলোসহ তাদের যে টার্কিস কনস্ট্রাকশন অ্যাসোসিয়েশন আছে তারাও এসেছেন। তারা আমাদের যেসব প্রকল্পে অংশ নিতে চান সে বিষয়ে আমরা তাদের জানিয়েছি৷
‘এনার্জিখাতে আমাদের বড় কিছু প্রকল্প হতে যাচ্ছে সেখানে যদি তারা বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী। এই কমিশনের বৈঠকে আমরা এসব বিষয়ে আলোচনা করবো। একই সঙ্গে আমাদের অর্জনগুলো যতদ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করবো।’
আরও পড়ুন তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ গভীর বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তুরস্কতুরস্ক কোন কোন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে- জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তুরস্ক আমাদের এনার্জি খাত, শিল্পায়নের জন্য মেশিনারি ইন্ডাস্ট্রি খাত, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তুরস্কের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক চিত্রটা কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তুরস্কে রপ্তানি করি ৫০০ মিলিয়ন ডলার, আর আমদানি করি ৪৫০ মিলিয়ন ডলার। আমরা একটু বেশি রপ্তানি করি সে তুলনায় আমদানি কম হয়। গতবছর তুরস্কে রপ্তানি ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
Advertisement
উপদেষ্টা আরও বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ২৭ কোটির মতো। জনসংখ্যার ভিত্তিতে আমাদের এই বাণিজ্যটা যথেষ্ট বলে মনে করি না। সেটা আরও বহুগুণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাগুলো অর্জনের জন্য খাতগুলোকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত করেছি। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনে ফাংশনাল স্ট্র্যাটেজিগুলো তৈরি করবো।
বাংলাদেশে তাদের কোন কোন খাতে বিনিয়োগ আছে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ আছে। এ পর্যন্ত তারা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগ করেছে। তারা এলপিজি, সিঙ্গার, কোকাকোলা, সেবাখাতসহ উৎপাদনশীল খাতেও বিনিয়োগ করেছে।’
সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হয়েছে। তারা জানিয়েছেন যে তাদের সামরিক রপ্তানি প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের, তারা উপযুক্ত এবং যুৎসই সামরিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছেন। তারা এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরাও এ বিষয়ে আগ্রহী।’
তারা কি অস্ত্র রপ্তানি করতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, তারা আর্মস রপ্তানি করতে চায়। আমরা শুধু বাণিজ্য আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনে বিস্তারিত আসবে।’
আরএমএম/বিএ