গত সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। এমন বাজারে দাম কমার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। সপ্তাহজুড়ে দাম কমায় চারদিনেই ফান্ডটির দাম সম্মিলিতভাবে ৭ কোটি টাকার বেশি কমে গেছে।
Advertisement
ব্যাংক হলিডের কারণে ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়েছে চারদিন। এ চারদিনে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬৪টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টির। আর ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এমন বাজারে বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে খুব একটা আগ্রহী না হওয়ায় সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। ফলে ডিএসইতে দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৩ টাকা ৬০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ফান্ডটির প্রতিটি ইউনিটের দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৩০ টাকা ৪০ পয়সা।
অবশ্য শুধু গত সপ্তাহে নয় ফান্ডটির দরপতন চলছে গত ডিসেম্বর মাস থেকেই। গত ৩ ডিসেম্বর ফান্ডটির প্রতিটি ইউনিটের দাম ছিল ৪৮ টাকা। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে কমে এখন ২৬ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ এক মাসে ফান্ডটির প্রতিটি ইউনিটের দাম কমেছে ২১ টাকা ২০ পয়সা বা ৪৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
Advertisement
এমন দরপতন হওয়ার আগে ফান্ডটির দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। গত বছরের ২ অক্টোবর ফান্ডটির প্রতিটি ইউনিটের দাম ছিল ৩০ টাকা। সেখান থেকে দাম বেড়ে ৪৮ টাকায় উঠে।
কোম্পানিটি ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০২২ সালেও ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। এর আগে ২০২১ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে ৮ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৭ শতাংশ, ২০১৮ সালে সাড়ে ৮ শতাংশ, ২০১৭ সালে সাড়ে ৮ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে ৬ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয়।
২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ফান্ডটির ইউনিট সংখ্যা ২ কোটি। এর মধ্যে ২ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ আছে।
প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
Advertisement
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- জুট স্পিনার্সের ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, বিকন ফার্মার ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটারের ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ড্রাগন সোয়েটারের ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ দাম কমেছে।
এমএএস/এমএএইচ/